বিহারে মোট বিধানসভা আসন ২৪৩টি। ম্যাজিক ফিগার ১২২। BJP-JDU জোট জিতেছে ১২৫টি আসনেই। বিরোধী মহাজোটের ঝুলিতে গেছে ১১০টি আসন। অন্যান্য জিতেছে ৮টি আসনে।
তবে নীতীশের রাজ্য বিহারেই তাঁর দল JDU-কে টপকে বড় দাদা হয়ে গেল বিজেপি। নীতীশের খামতি ঢাকলেন মোদি। বিজেপি জিতেছে ৭৫টি আসনে। সেখানে JDU জয়ী হয়েছে মাত্র ৪৩টি আসনে। অন্যদিকে, জোটের হিসেবে পিছিয়ে থাকলেও একার ফলের ভিত্তিতে, বিহারে ফার্স্ট বয় লালুপ্রসাদের দল। বিধানসভা ভোটে RJD জিতেছে ৭৬টি আসনে। কংগ্রেস জিতেছে মাত্র ১৯টি আসনে। অন্যদিকে, চোখে পড়ার মতো ভাল ফল করেছে বামেরা। ২৯টি আসনে প্রার্থী দিয়ে, ১৬টিতেই জিতেছে তারা।
তবে কড়া টক্করে একেবারে শেষ মুহূর্তে, ভোটগণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলেছে RJD। তাদের দাবি,
১১৯টি আসনে গণনা শেষের পর মহাজোটের প্রার্থীরা জিতেছিলেন। রিটার্নিং অফিসার তাঁদের শুভেচ্ছাও জানান। কিন্তু, এখন সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে না। উল্টে বলা হচ্ছে, মহাজোটের প্রার্থীরা হেরেছেন। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটেও এই প্রার্থীদের জয়ী দেখাচ্ছে। গণতন্ত্রে এরকম লুঠ চলে না।
১১৯টি আসনে জেতার পরও ১০৯টিতে জয়ী দেখানো হচ্ছে। নীতীশ কুমার আধিকারিকদের ফোন করে, বিভ্রান্ত করছেন। যদিও, নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, সমস নিয়ম মেনে যথাযথভাবেই গণনা হয়েছে।
বিহার ভোটের মুখে NDA থেকে বেরিয়ে, বিজেপির বিরুদ্ধে প্রার্থী না দিলেও, নীতীশ কুমারের দলের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছিলেন রামবিলাস পাসোয়ানের ছেলে চিরাগ! মাত্র একটি আসনে জিতেছে প্রয়াত রামবিলাস পাসওয়ানের দল।
তবে, ঘোষিত লক্ষ্য মতো, ভোট কেটে নীতীশ কুমারের দলকে ধাক্কা দিতে পেরেছে তারা। উল্টোদিকে সীমাঞ্চলে
অর্থাৎ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় মহাজোটকে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছেন আসাদউদ্দিন ওয়াইসির ল মিম। মিম কংগ্রেস এবং আরজেডির ভোট কেটেছে। আর সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হওয়ায় বড়সড় সুবিধা হয়েছে বিজেপির।
ভোটের ফল পরিষ্কার হতেই বিহার এবং দিল্লিতে উৎসব পালন শুরু হয়ে যায়। বিহারের ভোটপ্রচারে মোদি-অমিত শাহরা বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ভোটের ফল যাই হোক না কেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারই হবেন! কিন্তু, প্রশ্ন হল, বিজেপি যেখানে জেডিইউয়ের থেকে অনেক বেশি আসনে জিতছে, সেখানে তারা কি শেষপর্যন্ত নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়বে? আর যদি ছাড়েও, তাহলে কি আগামী পাঁচ বছর নীতীশ স্বাচ্ছ্যন্দে সরকার চালাতে পারবেন? তবে এরইমধ্যে একটা জিনিস স্পষ্ট, বাবা জেলে, মা ভোটের প্রচারে নামেননি, এই পরিস্থিতিতে মাত্র ৩১ বছরের তেজস্বী যাদব যেভাবে বিহারে ঝড় তুললেন, তাতে আগামী দিনে লালুর যোগ্য উত্তরসূরী হিসাবে নিজের জায়গা পাকাপাকি করে ফেললেন তিনি।