নয়াদিল্লি: রামমন্দিরের ঠেকা নিয়ে রাখেনি বিজেপি। শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের অযোধ্যা সফর সমর্থন করে বললেন উমা ভারতী। অযোধ্যায় মন্দির নির্মাণের জন্য সব পক্ষকে একজোট হওয়ার আবেদন করেছেন বিজেপিরই এই প্রথম সারির নেত্রী। অযোধ্যা সফরে গিয়ে রামমন্দিরের দাবিতে বড় শরিক বিজেপির ওপর চাপ বাড়িয়েছেন উদ্ধব। প্রশ্ন তুলেছেন, কেন্দ্রে বিজেপি সরকার চালাচ্ছে, তাও কেন মন্দির নির্মাণে বিলম্ব হচ্ছে। উমা বলেছেন, উদ্ধব ঠাকরের এই উদ্যোগের প্রশংসা করছি। রামমন্দিরের পেটেন্ট একা বিজেপির নয়। ভগবান রাম সবার। সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি, অকালি দল, আসাদুদ্দিন ওয়েইসি, আজম খান ও বাকি সবাইকে রামমন্দির নির্মাণের দাবির সমর্থনে এগিয়ে আসার আবেদন করছি।
গত সপ্তাহের শেষে অযোধ্যা সফরে উদ্ধব কেন্দ্রের বিজেপি জোট সরকারকে হুঁশিয়ারি দেন, হিন্দুদের আবেগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না! আরও বলেন, বিজেপির জনতার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে স্বীকার করা উচিত যে, রামমন্দির ইস্যু তাদের কাছে ‘ভোটের গিমিক’ মাত্র!


সুর চড়িয়ে শিবসেনা মুখপত্র সামনা-র সম্পাদকীয়তেও আজ বলা হয়েছে, রামমন্দির তৈরির ব্যাপারে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। মোদীকে ২০১৪র লোকসভা ভোটের প্রচারে ‘৫৬ ইঞ্চির ছাতি’ মন্তব্যের জন্য কটাক্ষ করে তারা বলেছে, কংগ্রেসের রামমন্দির তৈরির সাহস ছিল না, মানুষ তাদের ক্ষমতা থেকে হটিয়ে ‘৫৬ ইঞ্চির ছাতি’র অধিকারী এক ব্যক্তিকে প্রশাসনের ভার দিয়েছে। তবুও আপনি জল, স্থল, বায়ুতে কংগ্রসকে দেখছেন। এবার মানুষকে আবার আপনার বুকের ছাতি মেপে দেখতে হবে। রাম যদি বনবাসে থেকেই যান, তাহলে আপনার ‘রাজনৈতিক নাটুকেপনা’ বন্ধ করুন।
কংগ্রেস আদালতের প্রক্রিয়ায় বাধা দিচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর এই অভিযোগ সম্পর্কে শিবসেনা বলেছে, মোদীকে গাঁধী পরিবার, কংগ্রেসের দিকে আঙুল তোলা বন্ধ করতে হবে। আপনাকে লোকে এইসব সমস্যা নিয়ে কূটকাচালি করার জন্য ক্ষমতায় বসায়নি। কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিল রামমন্দির নির্মাণে বাধা দিয়েছিল বলে। সুতরাং এখন কংগ্রেসকে দায়ী করা বন্ধ করুন। কংগ্রেসের বিরোধিতা সত্ত্বেও কি নোট বাতিল চালু হয়নি? কংগ্রেসের বাধা সত্ত্বেও আপনারা জম্মু ও কাশ্মীরে পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির সঙ্গে সরকার গড়েননি? তাহলে রামমন্দির আটকাচ্ছে কোথায়? শিবসেবার অভিমত, বিজেপির দাবিমতো রামমন্দির নির্মাণে সবচেয়ে বড় অন্তরায় কংগ্রেস নয়, রাজনৈতিক সদিচ্ছার ঘাটতি। তারা বলেছে, রাহুল গাঁধীর কী গুরুত্ব আছে? কংগ্রেসের এমন কী শক্তি এত মূল্য দিতে হবে? মন্দির নিয়ে যদি রাজনীতি করে চলেন, কংগ্রেসের ঘাড়ে বন্দুক রাখেন, তবে আপনারা হারিয়ে যাবেন। রামমন্দির কংগ্রেসের নয়, বিজেপির প্রতিশ্রুতি ছিল।

প্রসঙ্গত, রামমন্দির চেয়ে ক্রমবর্ধমান দাবির প্রেক্ষিতে একাধিক রাজনৈতিক দল ও আধ্যাত্মিক নেতা এজন্য অর্ডিন্যান্স আনার দাবি তুলেছেন। ২০১০ এর এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ করে পেশ হওয়া রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মালিকানা মামলার পরবর্তী শুনানি গত ২৯ অক্টোবর আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে অযোধ্যার বিতর্কিত জমি নির্মোহী আখড়া, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড ও রামলালার মধ্যে সমান তিনভাগে বন্টন করতে বলা হয়েছিল।