পানাজি: গোয়ায় অবশেষে শরিকদের সঙ্গে রফা পাকা হল বিজেপির। প্রয়াত মনোহর পর্রীকরের স্থলে কাকে মুখ্যমন্ত্রী বাছাই করে তারা রাজ্যে সরকার চালাবে, তা নিয়ে দিনভর দফায় দফায় বৈঠকের পর ঠিক হয়েছে, জোট শরিকদের দাবি মেনে তাদের থেকে দুজনকে উপমুখ্যমন্ত্রী করা হবে, মুখ্যমন্ত্রী হবেন বিজেপির প্রমোদ সাবন্ত। তিনি বর্তমানে গোয়া বিধানসভার স্পিকার। উপমুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন শরিক গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টির প্রধান বিজয় সরদেশাই ও মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির বিধায়ক সুদিন ধাবলিকর। পর্রীকরের জমানায় উপমুখ্যমন্ত্রী পদটাই ছিল না।
বিজেপির প্রথম সারির এক নেতা বলেন, আমরা জোট শরিকদের বোঝাতে সফল হয়েছি, দুজন উপমুখ্যমন্ত্রীর ফর্মূলা চূড়ান্ত হয়েছে। সোমবার নতুন মুখ্যমন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রীরা শপথ নিচ্ছেন।
গোয়ায় পর্রীকরের বিকল্প বাছাইয়ে আলোচনার জন্য সোমবার সকালেই পানাজি পৌঁছন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকরী। তার আগে গতকাল গভীর রাতেই আলোচনা শুরু হয় বিজেপি, শরিক দলগুলির। ঐকমত্যে পৌঁছতে বিজেপি বিধায়কদের পাশাপাশি গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টি, মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির তিনজন করে বিধায়ক, সমসংখ্যক নির্দল বিধায়ককে নিয়ে বৈঠক চলে। বিজেপি, দুই শরিকের তিনজন করে বিধায়ক, তিন নির্দল বিধায়কের জোট সরকারই চালাচ্ছিলেন পর্রীকর। কিন্তু বারংবার বৈঠকেও কোনও রফাসূত্র না বেরনোয় বিকালে গডকরীই জানান, বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী চূড়ান্ত করলেও শরিকদের রাজি করানো যায়নি, ঐকমত্য হয়নি। শেষ পর্যন্ত দুজনকে উপমুখ্যমন্ত্রী করার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়ে বিজেপি তাদের সমর্থন সুনিশ্চিত করে।
বর্তমানে গোয়া বিধানসভায় একক বৃহত্তম দল কংগ্রেস। তাদের বিধায়ক সংখ্যা ১৪। বিজেপির ১২। ইতিমধ্যে বিধায়ক ফ্রান্সিস বিধায়ক, রবিবার পর্রীকরের মৃত্যু, গত বছর দুই কংগ্রেস বিধায়ক সুভাষ শিরোদকর, দয়ানন্দ সোপতের ইস্তফায় গোয়া বিধানসভার মোট সদস্যসংখ্যা ৪০ থেকে কমে হয়েছে ৩৬।
এদিন কংগ্রেস বিধায়করা বিরোধী দলনেতা চন্দ্রকান্ত কাভলেকরের নেতৃত্বে রাজ্যপাল মৃদুলা সিনহার সঙ্গে দেখা করে গোয়ায় সরকার গঠনের দাবিতে চিঠি দেন। পরে সাংবাদিকদের তাঁরা বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়াণে আমরা শোকাহত। কিন্তু তাঁর শেষকৃত্যের আগে নতুন সরকার গঠন করতে হবে। রাজ্যপাল এটা মেনেছেন, কংগ্রেস একক বৃহত্তম দল। তিনি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন। নয়াদিল্লিতে কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশে বিজেপি গোয়ায় ‘কৃত্রিম গরিষ্ঠতা’ তৈরি করছে। সারা দেশ, মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছি যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা উচিত। রাজ্যপালরা বিচারকের আসনে বসে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন।
এদিন শ্রদ্ধায়, শোকে শেষকৃত্য হয় পর্রীকরের। শেষযাত্রায় রাস্তায় শোকাতুর জনতার ঢল নামে। মুখাগ্নি করেন বড় ছেলে উত্পল। কলা অ্যাকাডেমি থেকে শোকযাত্রা শুরুর আগে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ বিশিষ্ট লোকজন।