নয়াদিল্লি: মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেই কমলনাথের একটি মন্তব্যে প্রবল বিতর্ক দানা বেঁধেছে। গতকাল শপথ নিয়ে সাংবাদিকদের কংগ্রেস নেতা বলেন, যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠান মোট কর্মসংস্থানের ৭০ শতাংশ রাজ্যের ছেলেমেয়েদের জন্য বরাদ্দ রাখবে, তাদের উত্সাহমূলক সুবিধা দেবে তাঁর সরকার। পাশাপাশি মন্তব্য করেন, মধ্যপ্রদেশে কাজের বাজারে ভাগ বসাচ্ছে বিহার, উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা লোকজন, বঞ্চিত হচ্ছে স্থানীয় ছেলেমেয়েরা।
এই বক্তব্যের প্রবল নিন্দা করে বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরা কমলনাথের বিরুদ্ধে বিভেদ ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমার, যিনি মধ্যপ্রদেশের সাংসদও, বলেছেন, বর্তমান নিয়মের ব্যাপারে উনি অবহিত নন বলে মনে হয় যাতে চাকরির ক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দাদের অগ্রাধিাকারের কথাই আছে। উনি কেন্দ্রেও মন্ত্রী ছিলেন। নিয়মবিধি ওনার জানার কথা। উনি যা বলছেন, সেটা তো এখনই বহাল আছে। উনি এসব বলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। কমলনাথের বিরুদ্ধে ‘বিভেদমূলক’ রাজনীতি করা ও দেশের এক অঞ্চলকে আরেক এলাকার বিরুদ্ধে লড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিজেপি সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় কটাক্ষ করেন, উনিও তো বহিরাগত, উনি যা বলছেন, তা রাজনীতির ক্ষেত্রেও চালু করতে হয়। কমলনাথের জন্ম কানপুরে। পড়াশোনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গে। ওনার ব্যবসা ছড়িয়ে আছে সারা দেশে। এখন উনি মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। এমন কথা ওনার মুখে শোভা পায় না।
বিজেপি নেতা গিরিরাজ সিংহ আবার কমলনাথের মন্তব্যের নিন্দা করে বলেছেন, উত্তরপ্রদেশ, বিহারের লোকজন কঠিন পরিশ্রম দিয়ে ওই রাজ্যের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। কমলনাথ তাহলে বলুন, ভারতে কি ফেডেরাল কাঠামো আছে না নেই। কংগ্রেস সভাপতির উচিত এজন্য বিহার, উত্তরপ্রদেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়া।
বিহারের সাংসদ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীবপ্রতাপ রুডির দাবি, তাঁর রাজ্য ও উত্তরপ্রদেশের লোকজন দেশের নানা প্রান্তে কাজ করছেন, সেইসব রাজ্যের বিকাশে তাঁদের অবদান আছে।
বিহার, উত্তরপ্রদেশের লোকজন মধ্যপ্রদেশের চাকরিপ্রত্যাশীদের কাজ কেড়ে নিচ্ছে, কমলনাথের এই দাবি ভুল বলে দাবি করেন সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ সিংহ যাদবও। বলেন, এতদিন এমন কথাবার্তা শুনতাম মহারাষ্ট্র থেকে। বলা হত, কেন উত্তরপ্রদেশের লোকজন এখানে এসে ব্যবসা করে, কাজ পায়। দিল্লিতেও এমন কথা উঠেছে। এখন বলা হচ্ছে মধ্যপ্রদেশে।
মধ্যপ্রদেশ সরকারের কৃষিঋণ মকুবের সিদ্ধান্ত নিয়ে অখিলেশ বলেন, এক লাইনের নির্দেশে বলা হয়েছে, ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কৃষিঋণ মকুব হল। ভাল সিদ্ধান্ত, তবে আমার দলের মত, কৃষকদের যাবতীয় ঋণ মাফ করে দেওয়া হোক।