লখনউ: উত্তরপ্রদেশের আসন্ন ১১টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সমাজবাদী পার্টি (সপা)-র সঙ্গে মিলে নয়, একাই লড়বেন বলে ঘোষণা করলেন মায়াবতী। বহুজন সমাজ পার্টি (বসপা) নেত্রীর ঘোষণার পর সপা সভাপতি অখিলেশ সিংহ যাদবও জানিয়ে দিলেন, মায়াবতীর দলের সঙ্গে তাঁদের জোট শেষ পর্যন্ত ভেঙে গেলে তাঁরাও ওই ১১ আসনে আলাদা লড়বেন। সব মিলিয়ে বিজেপিকে রুখতে লোকসভা ভোটের আগে তৈরি হওয়া মহাগঠবন্ধন ভাঙনের রাস্তায়ই এগিয়ে চলেছে, আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটুকুই বাকি।
মায়াবতী অবশ্য একা বিধানসভা উপনির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে অখিলেশ ‘নিজের কর্তব্য পালন’ করতে পারলে সপাকে সঙ্গে নিয়েই তিনি চলতে পারেন। এও বলেছেন যে, সপা-বসপা সম্পর্ক কখনও ভাঙবে না, তা যাতে অটুট থাকে, তিনি সেটা সুনিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন। কিন্তু রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতাকেও আবার পুরোপুরি অস্বীকার করা যায় না, সকলেই সেটা জানেন। তিনি বলেছেন, যে কোনও মূহূর্তে উপনির্বাচন ঘোষণা হতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশে আমরা কিছু আসনের উপনির্বাচনে একাই প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যখন মনে হবে, সপা সভাপতি তাঁর দায়িত্ব, কর্তব্য পালন করতে পারছেন, নিজের দলের কর্মীদের ঠিক রাস্তায় আনতে পারছেন, ভবিষ্যতে আমরা একসঙ্গে চলতে পারব। এখনও স্থায়ী বিচ্ছেদের পরিস্থিতি হয়নি। তবে উনি নিজের কর্তব্য পালনে সফল না হলে আলাদা চলাই শ্রেয় হবে।
সোমবার নয়াদিল্লিতে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে বৈঠক ডেকেছেন বলে জানান মায়াবতী।
এবারের লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে সপা-বসপা-আরএলডির মহাগঠবন্ধন মাত্র ১৫টি আসন জিতেছে। বসপা ১০, সপা ৫টি আসন পেয়েছে। মোট ৮০ আসনের মধ্যে বিজেপি ৬২টি পেয়েছে। কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ১টি, আপনা দল (এস) ২টি আসন। ২০১৪-য় কোনও আসনই পায়নি বসপা। ১১টি কেন্দ্রের বিধায়করা সাংসদ নির্বাচিত হওয়ায় সেখানে উপনির্বাচন হতে চলেছে।
মায়াবতী এও বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, সপার মূল ভোটব্যাঙ্ক যারা, সেই যাদব সমাজ যেখানে ওরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, সেখানেই সপা-র পাশে থাকেনি। ডিম্পল যাদব, ধর্মেন্দ্র যাদব, রামগোপাল যাদব যথাক্রমে কনৌজ, বদায়ুঁ, ফিরোজাবাদে হেরেছেন। ফলে আমরা গভীর চিন্তাভাবনা করতে বাধ্য হচ্ছি।
মায়াবতীর বক্তব্যের পরপরই অখিলেশ বলেন, জোট ভেঙে গেলে পার্টি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে ১১টি আসনের উপনির্বাচনে সপা প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করব আমরা। আমাদের পথ ভিন্ন হলেও একে স্বাগত জানাচ্ছি।
গঠবন্ধনের থেকে দলীয় কর্মীদের হত্যার ঘটনা সপার কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলেও জানান অখিলেশ।