কলকাতা: সোমবার, ১ মার্চ। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর জন্মদিন। ৭৭ বছর সম্পূর্ণ করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। আর সকাল থেকে শুভেচ্ছাবার্তায় ভাসলেন। সকালেই ট্যুইট করে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। যিনি দায়িত্ব নিয়ে রাজ্যে এসেই পাম অ্যাভিনিউয়ে বুদ্ধদেবের বাড়িতে গিয়ে দেখা করেছিলেন। পরে যখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, হাসপাতালে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল।


সোমবার সকালে জগদীপ ধনকড় ট্যুইট করেন, 'পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা। জ্ঞানী মানুষ। পাঁচ দশক মানুষের মধ্যে কাটিয়েছেন। যার মধ্যে দশ বছরেরও বেশি মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সরল জীবনযাপনের জন্য উনি বাকি সকলেরে চেয়ে আলাদা। মহত্বের উদাহরণ উনি। প্রার্থনা করি উনি আনন্দের সঙ্গে বাঁচুন, দীর্ঘজীবী হোন।'



রবিবার ছিল ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বামেদের ডাকা জনসভা। সহযোগী ছিল কংগ্রেস ও ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট। এই প্রথমবার বামেদের ব্রিগেডের মঞ্চে ছিল না কোনও রাজনৈতিক দলের নাম। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জোটকে তুলে ধরার প্রচেষ্টাতেই নতুন এই সমীকরণ। সেই সঙ্গে এই প্রথম ব্রিগেডে বামেদের জনসভায় অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।


জনসভার আগের রাত থেকেই ব্রিগেডমুখী ছিল জনতার ঢল। প্রত্যন্ত জেলা থেকে দলে দলে এসেছিলেন বামেদের কর্মী-সমর্থকেরা। বেজেছে ঢাক-ঢোল-ধামসা-মাদল। মুহূর্মুহূ উঠেছে স্লোগান। আর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ছিলেন ঘরবন্দি। ৫৯ এ পাম অ্যাভিনিউয়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর বাড়ি ছিল শান্ত। নিস্তরঙ্গ। বামেদের ব্রিগেড। অথচ তিনি গৃহবন্দি। অসুস্থ। শ্বাস-প্রশ্বাস নিতেও সমস্যা রয়েছে। ব্রিগেডে যাওয়ার জন্য ছটফট করছেন। ইচ্ছে ছিল ষোলো আনা। তবে চিকিৎসকদের পরামর্শে বাড়িতেই থাকতে হয়েছে। মন খারাপ ছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। বাম কর্মী-সমর্থকদের জন্য তাঁর বার্তাতেও সেই যন্ত্রণার ছাপ।


২০১৫ সালের ব্রিগেডে ১৮ মিনিট বক্তৃতা দিয়েছিলেন বুদ্ধবাবু। ২০১৯ সালের ব্রিগেডে অসুস্থ শরীরেও গিয়েছিলেন। নাকে অক্সিজেনের নল লাগিয়ে। কিন্তু শ্বাসকষ্টের জন্য গাড়ি থেকে নামতে পারেননি। সেই অর্থে এবারের ব্রিগেডই বুদ্ধবাবুকে ছাড়া বামেদের প্রথম সমাবেশ। 


অসুস্থ থাকায় গৃহবন্দি হয়েই জন্মদিন কাটাতে হচ্ছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে।