কলকাতা: আপনি কি করোনায় আক্রান্ত? কম খরচ এবং কম সময়ে পরীক্ষা করে বলে দেবে ‘ফেলুদা’! কোনও হেঁয়ালি বা সোশাল মিডিয়ার ছড়িয়ে পড়া ভিত্তিহীন ভাইরাল নয়। একেবারে বাস্তব। সত্যিসত্যিই করোনার রহস্যভেদ করবে ‘ফেলুদা’। অনুমোদন অনুমোদন দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া বা ডিসিজিআই-এর।
আসলে এই ‘ফেলুদা’-র পুরো অর্থ হল- এফএনক্যাস৯ এডিটর লিঙ্কড্ উইনিফর্ম ডিটেকশন অ্যাসে। করোনা সংক্রমিতকে চিহ্নিত করার বিশেষ পদ্ধতি। এটিই হল দেশের প্রথম ক্লাস্টার্ড রেগুলারলি ইন্টারস্পেসড্ শর্ট পালিনড্রোমিক রিপিট (ক্রিসপার) ভিত্তিক কোভিড-১৯ পরীক্ষা।
যা আবিষ্কার করেছেন দিল্লির ইনস্টিটিউট অফ জেনোমিক্স অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজি বা সিএসআইআর-আইজিআইবি-এর ২ বাঙালি বিজ্ঞানী দেবজ্যোতি চক্রবর্তী এবং পূর্ব মেদিনীপুরের সৌভিক মাইতি।
সিএসআইআর-আইজিআইবি-এর সঙ্গে এই উদ্যোগে সামিল টাটা সন্স। বিজ্ঞানীদের দাবি, আরটি-পিসিআর-এ যেখানে ৪ ঘণ্টা সময় লাগে, সেখানে ‘ফেলুদা’ উত্তর দেবে এক ঘণ্টারও কম সময়ে।
কীভাবে কাজ করবে এই প্রযুক্তি? দুই বাঙালি বিজ্ঞানীর দাবি, কোভিড-১৯ ভাইরাসে-র আরএনএ-কে প্রথমে ডিএনএ-তে বদলানো হবে। এরপর পলিমারেজ চেন রিঅ্যাকশন বা পিসিআর যন্ত্রের মাধ্যমে একটি ডিএনএ থেকে একাধিক কপি-ডিএনএ তৈরি করা হবে।
তার সঙ্গে ক্রিসপার-ক্যাস-৯ বলে ব্যাকটেরিয়া প্রোটিনের সঙ্গে সংযুক্তি ঘটানো হবে। যা ভাইরাল ডিএনএ-কে চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। এরপর কাগজের স্ট্রিপে ফেলা হবে সন্দেহভাজন ব্যক্তির লালারসের নমুনা।
স্ট্রিপে প্রথমে একটি দাগ ফুটে উঠবে। বিজ্ঞানের পরিভাষায় যা কন্ট্রোল লাইন বলে পরিচিত। এই দাগ দেখে বোঝা যায় স্ট্রিপ ঠিক মতো কাজ করছে। দ্বিতীয় দাগটির নাম টেস্ট লাইন। স্ট্রিপে সেই দাগ ফুটে উঠলে বুঝতে হবে, যাঁর নমুনা তিনি করোনা সংক্রমিত।
দুই বাঙালি বিজ্ঞানীর দাবি, এই পরীক্ষার খরচ ৫০০-৬০০ টাকা। বিদেশি কিটে যেটা কয়েক হাজার টাকা।
শনিবার টাটা গ্রুপের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নতুন এই করোনা-কিটে অনুমোদন দিয়েছে ডিসিজিআই। ভারতে প্রথম ক্রিসপার প্রযুক্তিতে সম্মতি দিল কেন্দ্র। খুব তাড়াতাড়িই তা বাজারে আনা হবে।
এবার শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অনুমোদনের অপেক্ষা।