নয়াদিল্লি: এয়ারসেল-ম্যাক্সিস মামলায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরমের বিচারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি মিলেছে বলে আদালতে জানাল সিবিআই। এটা কংগ্রেসের এই প্রথম সারির নেতার কাছে একটা বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার তরফে আদালতকে বলেন, ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১৯৭ ধারা ও দুর্নীতি রোধ আইনের ১৯ ধারায় অভিযুক্ত পি চিদম্বরমের বিচার করতে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় অনুমোদন মঞ্জুর করেছে।
এই মামলায় মোট অভিযুক্ত ১৮ জন। চিদম্বরমের পাশাপাশি পাঁচ সরকারি কর্তারও বিচারের অনুমতি প্রয়োজন। এজন্য আদালতের কাছে আরও ২ সপ্তাহ সময় প্রার্থনা করে মেহতা বলেন, অভিযুক্ত বাকি সরকারি আমলাদের বিচারের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদনের অপেক্ষা করা হচ্ছে। আদালত ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চিদম্বরম ও তাঁর পুত্র কার্তির গ্রেফতারি থেকে অব্যাহতির মেয়াদ বৃদ্ধির পাশাপাশি কয়েকজন অভিযুক্তের বিচারের জন্য সম্মতি জোগাড় করতে সিবিআইকে তিন সপ্তাহ সময় দেয়।
সিবিআইয়ের তরফে বলা হয়, এমন মারাত্মক অপরাধের ব্যাপারে আরও কয়েকজন অভিযুক্তের বিচারের জন্য সম্মতি সংগ্রহে আদালত আরও বেশি সময় দিতে রাজি না হলে ন্যয়বিচার মার খেতে পারে। ১৮ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন স্থির করেন বিশেষ বিচারক ও পি সাইনি।
এই সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক এক অবৈধ আর্থিক লেনদেন মামলায় ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) তরফে মেহতা মৌখিক ভাবে আদালতকে বলেন, অভিযুক্তকে এজেন্সিকে বিভ্রান্ত করে মিথ্যা বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি অন্য দেশে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও বিভিন্ন সূত্র থেকে আসা অর্থ সংক্রান্ত তথ্য গোপন করে গিয়েছেন। ইডি বলেছে, চার্জশিট পেশ হওয়ার পরও নানা নতুন তথ্য সামনে এসেছে বলে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার হয়ে পড়েছে।
চিদম্বরমের তরফে আইনজীবী কপিল সিবাল সিবিআই ও ইডি-র পেশ করা উভয় মামলাতেই চিদম্বরম ও তাঁর ছেলে কার্তির গ্রেফতারি থেকে অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেন।
সম্প্রতি দুজনেই মামলার তদন্ত চলাকালে দুই তদন্ত সংস্থার তোলা অসহযোগিতা ও মুখোমুখি না হওয়ার অভিযোগ খারিজ করেছেন, তা প্রমাণিত হয়নি বলে দাবি করে বলেছেন, হেফাজতে নিয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন নেই।
চিদম্বরম ও তাঁর ছেলের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে সিবিআই ও ইডি অভিযোগ করে, তাঁরা তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। ফলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমতো সময়ের মধ্যে তদন্ত পর্ব সম্পূর্ণ করা কঠিন হয়ে উঠছে। তাই ওঁদের হেফাজতে রেখে জেরা করা দরকার।
চিদম্বরম গত মে মাসে আগাম জামিনের আবেদন করেন। নানা সময়ে গ্রেফতারি থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন তিনি।
৩৫০০ কোটি টাকার এয়ারসেল-ম্যাক্সিস ডিল ও ৩০৫ কোটি টাকার আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় তদন্ত সংস্থাগুলির নজরদারির আওতায় রয়েছেন চিদম্বরম ও তাঁর ছেলে।
এই মামলায় এর আগে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দয়ানিধি মারান ও তাঁর ভাই কলানিধি মারান ও অন্যদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে সিবিআই দাবি করে, চিদম্বরম ২০০৬ এর মার্চে ম্যাক্সিসের শাখা মরিশাসের গ্লোবাল কমিউনিকেশন সার্ভিসেস হোল্ডিংস লিমিটেডকে ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন বোর্ডের অনুমোদন দিয়েছিলেন।