এক ঝলকে সেই রুদ্ধশ্বাস মুহূর্তগুলি:
রাত ১.২৫: ‘মিশন অপারেশন কমপ্লেক্স’-এ পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।অধীর আগ্রহে স্ক্রিনের দিকে চোখ রেখে সোফায় বসেন তিনি। স্ক্রিনে এক একটি তথ্য ভেসে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে হাততালি দিয়ে উঠছিলেন সকলে।
রাত ১.৩৮: ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০ কিলোমিটার উচ্চতা থেকে সেকেন্ডে ১,৬৮০ মিটার গতিতে নামতে শুরু করল। বিক্রম তার কৃত্রিম মেধা দিয়ে প্রাথমিক ব্রেক কষা শুরু করল। গতি প্রতি সেকেন্ডে ১,৩০০ মিটার থেকে কমে হল সেকেন্ডে ৭৬০ মিটার। উচ্চতা আরও কমতে থাকে।
রাত ১.৫০: গতি আরও কমায় ল্যান্ডার বিক্রম। ততক্ষণে ল্যান্ডার পজিশন ডিটেকশন ক্যামেরা অ্যাকটিভ হয়ে গিয়েছে। চাঁদের মাটিতে অবতরণের জায়গা বাছাইয়ের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ইসরোর দফতরে উত্তেজনায় প্রায় শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে ভুলে গিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
রাত ২: চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে চন্দ্রযান ২-এর দূরত্ব যখন মাত্র ২.১ কিলোমিটার, তখনই স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে আচমকা বিজ্ঞানীদের মুখে অন্ধকার নেমে আসে। উপস্থিত সকলে নড়েচড়ে বসেন। সকলের চোখে তখন একটাই প্রশ্ন, কী হল চন্দ্রযানের?
রাত ২.০৭: প্রধানমন্ত্রীর দিকে এগিয়ে যান ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবন। প্রধানমন্ত্রীকে কিছু বলেন তিনি। শুনে সোফায় বসে পড়েন নরেন্দ্র মোদি। কিছুক্ষণ পর সোফা থেকে ফের উঠে দাঁড়ান প্রধানমন্ত্রী। এগিয়ে যান বিজ্ঞানীদের মাঝে। পিঠ চাপড়ে সাহস দেন।
রাত ২.১০: ইসরোর চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন, ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ইসরোর যোগাযোগ।শিবন ঘোষণা করলেন, বিক্রম ২.১ কিলোমিটার উপরে থাকা পর্যন্ত যোগাযোগ ছিল। তার পরে বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে।
রাত ২টো ১৯ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী এগিয়ে গিয়ে শিবনের পিঠ চাপড়ে বললেন, ‘আপনারা যা করেছেন দেশ আপনাদের জন্য গর্বিত। আশা করি আবার আপনারা দেশকে খুশির খবর দিতে পারবেন।’ উপস্থিত ৬০ পড়ুয়াদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলেন মোদি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও আগামী এক বছর ধরে কক্ষপথে কাজ করবে অরবিটার। তাতেও চাঁদ সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য সামনে আসবে বলে আশাবাদী সকলে।