নয়াদিল্লি: তিব্বত সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয় অত্যন্ত সংবেদনশীল। তাই এ নিয়ে নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ অবস্থান নেওয়া উচিত। এই ভাষাতেই ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিব্বত সম্পর্কিত খবর করতে উপদেশ দিল চিন। দিল্লির চিনা দূতাবাস এ ব্যাপারে বিবৃতি দিয়েছে।

বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আদামী দলাই লামা নির্বাচনে তিব্বতীদের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া সংক্রান্ত পদক্ষেপ নিয়ে একটি আইনে স্বাক্ষর করেছেন। এতে রেগে আগুন বেজিং। এর মধ্যে তাদের নজরে পড়েছে, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নাকি এই মার্কিন আইন সমর্থন করেছে, চিনা দখলীকৃত তিব্বতে ভারতীয় হস্তক্ষেপ দাবি করেছে তারা। এ নিয়েই এই নজিরবিহীনভাবে কঠোর চিনা বিবৃতি। দূতাবাস মুখপাত্র জি রং বলেছেন, তাঁদের আশা, কয়েকটি অন্তত ভারতীয় সংবাদমাধ্যম চিনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা নিয়ে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ অবস্থান নেবে। তিব্বতকে চিনারা বলেন জিয়াং। রং বলেছেন, জিয়াংয়ের মত অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে সম্পর্কিত খবর করতে গিয়ে জিয়াংয়ের আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়ন নিরপেক্ষভাবে খতিয়ে দেখবে যাতে ভারত-চিন দ্বিরাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতি হয়। চিনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলিয়ে তিব্বত কার্ড খেললে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ভারতীয় আধিকারিকরা এ নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেননি।

লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ সীমা বা LAC বরাবর ৮ মাস ধরে ভারত-চিন অচলাবস্থা চলছে। ফলে এশিয়ার এই দুই শক্তিশালী রাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখন তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশ এখনও LAC থেকে সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে সহমত হয়নি, যে সব এলাকাগুলি নিয়ে মতানৈক্য, বেশ কয়েক রাউন্ড কৃটনৈতিক এবং সেনা স্তরের আলোচনার পরেও সে সব জায়গায় উত্তেজনা বিন্দুমাত্র কমেনি।

জি রং বলেছেন, ভারত ও চিনের মধ্যে ২০০৩-এ যে ডিক্লারেশন অন প্রিন্সিপলস ফর রিলেশনস অ্যান্ড কমপ্রিহেনসিভ কোঅপারেশন স্বাক্ষরিত হয়, তাতে দিল্লি তিব্বত স্বয়ংশাসিত অঞ্চলকে চিনা এলাকা বলে স্বীকৃতি দিয়েছে, তিব্বতীদের চিনের বিরুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যোগদানের অধিকার দেয়নি। তাঁর বক্তব্য, তাই ভারত-চিন দুদেশেরই স্বার্থের কথা মাথায় রেখে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যাতে স্বাস্থ্যকর ও স্থায়ী উন্নয়নের পথে হাঁটে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখা উচিত।

মার্কিন কংগ্রেসে গত মাসের শুরুতে যে টিবেট পলিসি অ্যান্ড সাপোর্ট অ্যাক্ট স্বাক্ষরিত হয়, তাতে তিব্বতের প্রতি মার্কিন সমর্থনের বার্তা দৃঢ়ভাবে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, চিন যদি তিব্বতীদের ধর্মীয় অধিকারে নাক গলিয়ে আগামী দলাই লামা নির্বাচনের চেষ্টা করে, তবে চিনা আধিকারিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা চালু করবে তারা।