বারাণসী: রঙ্গবতী একাদশীর (Rangbhari Ekadashi) পরের দিন বারাণসীর (Varanasi) মণিকর্ণিকা ঘাটে (Manikarnika Ghat) পালিত হল ‘চিতাভস্ম হোলি’ (Chita Bhasma)। এই প্রথার মধ্যে দিয়েই শুরু হল হোলি উৎসব। মহাশ্মশান ঘাটে চিতাভষ্ম মেখে শুরু হয় এই উৎসব। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। সকাল থেকেই মণিকর্ণিকা ঘাটে ভিড় জমান বহু মানুষ। মহাশ্মশাননাথ মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনার পর শুরু হয় ‘চিতাভস্ম হোলি’ উৎসব। সেখানে উপস্থিত হওয়া লোকজন এক অপরকে শ্মশানের চিতাভস্ম ও আবির মাখিয়ে দেন। এরই সঙ্গে তাঁদের গলায় ছিল চিরাচরিত লোকগীতি ‘খেলে মশানে মে হোলি দিগম্বর, খেলে মশানে মে হোলি...’।
বারাণসীতে ‘চিতাভস্ম হোলি’ বহু প্রাচীন প্রথা। মানুষের বিশ্বাস, এভাবে হোলি উৎসব পালন করলে মোক্ষলাভ করা যায়। স্কন্ধ পুরাণ ও প্রাচীন গ্রন্থগুলিতে এই উৎসবের বর্ণনা রয়েছে।
ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় উৎসব হল হোলি। সারা দেশেই উৎসাহের সঙ্গে পালিত হয় এই উৎসব। লোকজন একে অপরকে রং মাখিয়ে এই দিনটি পালন করেন। কোথাও শুধু আবির, আবার কোথাও ফুলের মাধ্যমে পালিত হয় হোলি। তবে বারাণসীতে হোলি উৎসব একটু আলাদা। এখানে এই উৎসব শুরু হয় রঙ্গবতী একাদশীর দিন থেকে। এর পরের দিন পালিত হয় ‘চিতাভস্ম হোলি’।
মহাশ্মশানের চিতাভস্ম মেখে হোলি উৎসব পালন করার পিছনে প্রাচীন ধর্মবিশ্বাস আছে। কথিত আছে, রঙ্গবতী একাদশীর পরের দিন বারাণসীর মণিকর্ণিকা ঘাটে চিতাভস্ম মেখে হোলি খেলতে আসেন স্বয়ং শিব। সেই কারণেই এই দিনটিতে বারাণসীর মণিকর্ণিকা ঘাটে চিতাভস্ম মেখে হোলি উৎসব পালন করার জন্য এত মানুষ ভিড় জমান।
বারাণসীর এক পুরোহিত জানিয়েছেন, ‘প্রভু শঙ্করের কপালে বসন্ত পঞ্চমীর তিলক লাগানোর পরেই বারাণসীতে হোলি উৎসব শুরু হয়। এরপর তাঁরা শিবরাত্রির দিন বিয়ে করেন। মা পার্বতীর তোতাপাখি দান করার পর বারাণসীতে এসে অন্যান্য দেবতা, যক্ষদের সঙ্গে হোলি খেলেন প্রভু বিশ্বনাথ। কিন্তু সেদিন তিনি ভূত-প্রেতদের সঙ্গে হোলি খেলতে পারেননি। তাই পরদিন চিতাভস্ম মেখে সবার সঙ্গে মিলে হোলি খেলেন মহাদেব। তারপর থেকেই এই প্রথা চলে আসছে।’