নয়াদিল্লি: আজকাল গাড়ি বাজারে যা  আসছে, তাদের মধ্যে এমন কিছুই নেই, যা অন্যদের থেকে তাদের অনন্য করতে পারে। প্ল্যাটফর্ম শেয়ারিং, ইঞ্জিন শেয়ারিং, একই ধরনের ইনফোটেনমেন্ট সিস্টেম। এর অর্থ গাড়িগুলি ধীরে ধীরে তাদের বিশেষত্ব হারাচ্ছে। যে এসইউভি এখানে দেখছেন, তা কিন্তু ভিন্ন ধরনের এবং তা আপনার প্রতিবেশী, সরকর্মীদের ঈর্ষাণ্বিত করতে পারে। কীভাবে এর নাম উচ্চারণ করবেন, শুধুমাত্র সেজন্য প্রস্তুত থাকুন!




 


সিট্রোয়েন সি৫ এয়ারক্রস এসইউভি ক্ষেত্রে এক ঝলক টাটকা বাতাস।  এর বৈশিষ্ট্য অন্যদের চেয়ে আলাদা। এর বিশেষ ফরাসি ডিজাইন অন্যান্যদের থেকে আলাদা করেছে। সি ৫ একটি বড় এসইউভি, যার দৈর্ঘ্য ৪.৫ মিটার, কিন্তু ছবিতে খুবই কমপ্যাক্ট মনে হয়। এতে রয়েছে প্রচুর গ্লোস ব্ল্যাক ডিটেলিং, ফ্লোটিং রুফ ও সেইসঙ্গে কুল ডুয়াল টোন ক্লুক, একে অনেকটাই আলাদা করে তুলেছে। এর ঘণ ক্ল্যাডিং ও সর্বত্র রুফ-রেল গাড়িতে পুরুষ সুলভ বৈশিষ্ঠ্য যোগ করেছে। অন্যদিকে, ১৮ ইঞ্চির হুইল বেশ মানানসই।




ইন্টেরিওরের কথা বলতে গেলে এতে উচ্চমাণের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এর অন্দরসজ্জা খুবই সুন্দর। কাপড়ের সঙ্গে ব্যবহার করা হচ্ছে গ্রে লেদার। সেইসঙ্গে রয়েছে ক্রোম।  এয়ার কোন ভেন্টের অনন্য ডিজাইনের স্টিয়ারিং বড় বাটনের ব্যবহার কতটা সহজ, সেদিকে খেয়াল রাখা হয়েছে। ৮ ইঞ্চিক টাচ স্ক্রিন ও ১২.৩ ইঞ্চি টিএফটি ডিজিটাল ক্লাস্টার সহ এতে রয়েছে পর্যাপ্ত প্রযুক্তি।


 




 


ডিজাইনের দিক থেকে  ইনস্ট্রুমেন্ট ক্লাস্টার খুবই সাধারণ, দ্রুত অ্যাকসেসের জন্য সেন্টার স্ক্রিনের নিচে টাচ কন্ট্রোল বেশ ভালো কাজ করে। এতে বেশ কিছু ফিচার রয়েছে,যা এমন দামে প্রত্যাশিত। রয়েছে পাওয়ার্ড ড্রাইভার্স সিট (ডুয়াল পাওয়ার্ড সিট ভালো হত?), এলইডি হেড ল্যাম্প, প্যানারমিক সানরুফ, হ্যান্ডস ফ্রি টেইল-গেট ওপেনিং, ফ্রন্ট ও রিয়ার পার্কিং সেন্সর, হ্যান্ডস ফ্রি পার্কিং, ডুয়াল জোন ক্লাইমেট কন্ট্রোল,প্যাডেল ল্যাম্প, টায়ার প্রেসার মনিটরিং সিস্টেম, এয়ার কোয়ালিটি সিস্টেম ও আরও অনেক কিছু। সিট্রোয়েন এও জানিয়েছে যে, এর রিয়ার সিট ব্যক্তিগতভাবে মানানসই করে নেওয়া যায়। এটা ঠিক এবং এতে রয়েছে বাস্তবসম্মততার ছোঁয়া।


 


 


ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা বেশ রিফ্রেশিং ও ভিন্ন। কেননা,সিট্রোয়েন এটা দাবি করে না যে, সি৫ এয়ারক্রস স্পোর্টি। তার বদলে এটি ড্রাইভিংয়ের জন্য  বেশ ভালো ও রিল্যাক্সিং। স্টিয়ারিংয়ের হুইলে রয়েছে একটি মোটা রিম এবং স্টিয়ারিং হাল্কা, কিন্তু খুব বেশি হাল্কা না হওয়ায় তা বেশ ভালো। ভারতে একটি ইঞ্জিনের বিকল্প উপলব্দ এবং তা হল ২.০ ডিজেল, যা ১৭৭ এইচপি ও ৪০০ এনএম ডেলিভার করে। অন্যদিকে, যে একটিমাত্র গিয়ারবক্স দেওয়া হচ্ছে, তা ৮-স্পিড অটোমেটিক। সি৫ এয়ারক্রসের সাসপেনশন হাইড্রোলিক কুশনের সঙ্গে। এতে চড়লে রাস্তায় খানা খন্দ ও স্পিড ব্রেকার থাকার কথা বোঝা যায় না। আমাদের দেশে সি৫ এয়ারক্রসের এই রাইড কোয়ালিটি ক্রেতাদের পছন্দ হওয়াটাই স্বাভাবিক।




ডিজেল ইঞ্জিন বেশ ডিসেন্ট ও বেশ ভালো সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এর অটোমেটিক গিয়ারবক্স বেশ মসৃণ এবং রিল্যাক্সিং। একটা জিনিস অবশ্য মাথায় আসতে পারে, বেশি জোরে চালালে ইঞ্জিনের আওয়াজ একটু বেশি। এছাড়া সি৫ ক্রুজ বেশ ভালো এবং মাইলেজ   প্রতি লিটারে প্রায় ১৩-১৫ কিলোমিটার। সি ৫ এয়ারক্রস প্রথমে লা মিশন ডিলারশিপের মাধ্যমে বিক্রয় করা হবে ১০ টি স্থানে। যে দশ শহরে এর ব্যবস্থা থাকবে না, সেখানে মোবাইল শোরুম থাকবে। সি৫ এয়ারক্রস সিট্রোয়ের প্রথম মডেল, যা ভারতে লঞ্চ হয়েছে।


 




এর উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলি হল লুকস, ইন্টেরিওর, স্পেস, কমফোর্ট, রাইড কোয়ালিটি।


যে বিষয়গুলি নেতিবাচক, তা হল নয়জি ডিজেল ইঞ্জিন ও পেট্রোল ব্যবহারের সুবিধা নেই।