নয়াদিল্লি: কাশ্মীর দেশের ঘরোয়া ব্যাপার, সময়ের পরীক্ষায় সফল ভারতের এই নীতি কেন্দ্রের সরকার লঙ্ঘন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্ট প্রতিনিধিদলকে কাশ্মীর সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে। এটা মহাপাপ! বলল কংগ্রেস। কেন্দ্রের এনডিএ সরকারের বিদেশি দলটিকে শ্রীনগর যাত্রার অনুমতি দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছে দেশের বিরোধী শিবির সহ নানা মহল। এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে বিদেশি রাষ্ট্রের নাক গলানোর সুযোগ করে দিচ্ছে, বলছে তারা।
ইইউ প্রতিনিধিদলটি আজ সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছে, ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল ভারতের ঘরোয়া বিষয়। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইকে পূর্ণ সমর্থন জানায় তারা।
কিন্তু কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে আজ সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, কাশ্মীর আমাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা এবং আমরা সেখানে বাইরের কোনওরকম হস্তক্ষেপ বা সরকারি, অ-সরকারি লোকজন, সংগঠন বা ব্যক্তি, যে-ই হোক, তৃতীয় কোনও পক্ষের মধ্যস্থতাই মানব না, গত ৭২ বছর ধরেই এটাই ভারতের সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নীতি। মোদি সরকার গত তিনদিনে এর উল্টো রাস্তায় হেঁটে মহাপাপ করেছে। যেচে, ইচ্ছা করেই মোদি সরকার আমাদের কাশ্মীর সংক্রান্ত সময়ের কষ্টিপাথরে যাচাই হওয়া নীতি লঙ্ঘন করে কাশ্মীর ইস্যুকে আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে গেল।
কাশ্মীরে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুরজেওয়ালা বলেন, কাশ্মীরের বাস্তব পরিস্থিতি মূল্যায়নে তৃতীয় একটি পক্ষকে নিয়োজিত করে, তাও আবার একটি অজানা-অচেনা থিঙ্কট্যাঙ্কের মাধ্যমে, মোদি সরকার বিরাট অন্যায় করেছে। এভাবে জম্মু ও কাশ্মীরের ওপর ভারতের সার্বভৌম অধিকারের পরিপন্থী কাজ করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এসে ভারতের সার্বভৌমত্ব, জাতীয় সুরক্ষাকে চ্যালেঞ্জ করা ও ভারতের সংসদকে অপমানের মতো ইস্যু নিয়ে নিজের বক্তব্য জানান।
একজন অপরিচিত ‘আন্তর্জাতিক বিজনেস ব্রোকার’ ইইউ সাংসদদের প্রতিনিধিদলটির ভারত সফরের আয়োজন করেছেন বলে জানিয়ে সরকারের জবাব দান সুরজেওয়ালা। বলেন, কূটনীতি সামলানোর ভার একজন আন্তর্জাতিক বিজনেস বোকারকে আউটসোর্স করে ভারতের কূটনীতির চমত্কার নমুনা দেখাল মোদি সরকার। প্রধানমন্ত্রী কি জানাবেন, কে এই ম্যাডি শর্মা? উইমেনস ইকনমিক অ্যান্ড সোস্যাল থিঙ্কট্যাঙ্ক ও ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর নন-অ্যালাইন্ড স্টাডিজের সঙ্গে বিজেপি কী সম্পর্ক? কেন এবং কোন অধিকারবলে ম্যাডি শর্মা ব্যক্তিগত সফরে আসা ইইউ সাংসদদের দলটির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের ব্যবস্থা করলেন? কেন ভারত সরকার এই সফরের সুযোগ দিল? ওঁদের পুরো সফরের খরচের অর্থ কোথা থেকে আসছে? বিদেশমন্ত্রককে কেন পুরোপুরি পাশে সরিয়ে রাখা হয়েছে?
ইইউ প্রতিনিধিদলের সফরকে অপরিণত, ভুল পরামর্শে পরিচালিত, বিজেপি সরকারের কুঅভিপ্রায়ে চালানো জনসংযোগ কর্মসূচি প্রক্রিয়া বলেও কটাক্ষ করেন সুরজেওয়ালা।