নয়াদিল্লি: ৩ মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণের দিনই বড়সড় ধাক্কা খেল কংগ্রেস। ১৯৮৪-র শিখ বিরোধী দাঙ্গায় প্রথম সারির কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারকে দিল্লি হাইকোর্ট যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল। বিচারপতি এস মুরলীধর ও বিনোদ গোয়েলের বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। নিম্ন আদালতে ছাড় পেয়ে যান সজ্জন কুমার। সেই রায় বদলে দিয়ে হাইকোর্ট বলেছে, সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে, প্রতিষ্ঠিত হবে ন্যায়ের শাসন।


অকালি দল জানিয়েছে, যতদিন না সজ্জন কুমার ও জগদীশ টাইটলারকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে ও গাঁধী পরিবারকে আদালতে টেনে এনে জেলে পোরা না হচ্ছে, ততদিন বিচারের জন্য লড়াই চলবে।



দিল্লি হাইকোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা ভাবছেন সজ্জন কুমার। ১৯৮৪-র শিখ দাঙ্গা মামলায় তাঁকে দোষী ঘোষণা করে বাকি জীবনটা জেলে কাটাতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে আদালত। সজ্জনের আইনজীবী অনিল শর্মা বলেছেন, হাইকোর্টের রায় ২০০ পৃষ্ঠার ওপর। সেটি পড়ে সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগবে। তারপরই তাঁরা শীর্ষ আদালতে যেতে পারেন।
শর্মা জানান, ৭৩ বছর বয়সি সজ্জন কুমারকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আত্মসমর্পণের সময় দিয়েছে আদালত। তার আগেই দোষী ঘোষণার রায়কে চ্যালেঞ্জ জানানোর চেষ্টা করা হবে। ৩১ ডিসেম্বরের আগে কোনও আবেদন পেশ করা না গেলে সজ্জন আত্মসমর্পণ করবেন।

আজই রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ের ৩ মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, কমলনাথ ও ভূপেশ বাঘেলের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। এই শপথগ্রহণ ঘিরে এতদিন জাতীয় রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে থাকা কংগ্রেসের শক্তিপ্রদর্শনের কথা ছিল, সব বিরোধী দলগুলিকে নিমন্ত্রণও করে তারা। কিন্তু এর মধ্যে সজ্জন কুমারের এই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের খবরে তাদের উৎসবের মেজাজে কিছুটা দুশ্চিন্তার ছায়া ফেলতে বাধ্য। এখন কথা হল, শিখ দাঙ্গায় কমল নাথের নামও একাধিকবার উঠেছে। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী সেই কমল নাথকেই মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত করায় ইতিমধ্যেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে শিখ দলগুলি, তাদের অভিযোগ, গণহত্যায় অভিযুক্তদের এভাবেই রাজনীতির মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনছে কংগ্রেস।

১৯৮৪-র ৩১ অক্টোবর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর হত্যার পর দিল্লিতে যে শিখবিরোধী দাঙ্গা শুরু হয় তাতে প্রাণ হারান অন্তত ৩,০০০ নিরপরাধ মানুষ। তার পর থেকেই অপরাধীদের চরম শাস্তির দাবিতে একাধিক আদালতে মামলা চলছে। দিল্লি ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ৫ শিখকে খুনের ঘটনায় ট্রায়াল কোর্টে ছাড়া পেয়ে যান সজ্জন কুমার, তবে দোষী সাব্যস্ত হয় অন্য ৫ জন। সেই রায় উল্টে দিল্লি হাইকোর্ট এবার সজ্জন কুমারকেও ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। ৩১ তারিখের মধ্যে তাঁকে আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।