নয়াদিল্লি: সংসদে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের ভাষণের ওপর ধন্যবাদসূচক প্রস্তাবের ওপর জবাবী ভাষণে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করলেন নরেন্দ্র মোদি। গাঁধী-নেহরু পরিবারের বাইরে অন্য কারও অবদান কংগ্রেস কোনওদিন স্বীকার করেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি। এও বলেন, দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ি, পি ভি নরসিমা রাওয়ের ভাল কাজের কথা কংগ্রেস কখনও বলেনি।
জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গও ছিল মোদির ভাষণে। ঘটনাচক্রে ১৯৭৫ সালে আজকের দিনেই জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল ইন্দিরা গাঁধীর শাসনে। কংগ্রেসকে তিনি মনে করিয়ে দেন, জরুরি অবস্থা ছিল গণতন্ত্রের গায়ে একটা কালো দাগ যা কখনও মুছে যাওয়ার নয়। জরুরি অবস্থার মাধ্যমে ‘ভারতের আত্মাকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিন কংগ্রেসই ছিল মোদির ভাষণের মূল টার্গেট। তিনি বলেন, কিছু লোক মনে করে, মাত্র কয়েকজন জাতীয় প্রগতিতে অবদান রেখেছেন। তারা শুধু সেই নামগুলিই শুনতে ভালবাসে, বাকিদের উপেক্ষা করে। কিন্তু আমাদের ভাবনা ভিন্ন ধরনের। প্রত্যেকটি লোক, নাগরিক ভারতীয় উন্নতির জন্য কাজ করেছেন। ওরা কি কখনও নরসিমা রাওজির ভাল কাজের কথা বলেছে? এই লোকসভার বিতর্কে এরা মনমোহনজির নাম পর্যন্ত করেনি।
ভোটে জিতে টানা দ্বিতীয়বার কেন্দ্রে ক্ষমতা দখলের পর মোদি আজই প্রথম ভাষণ দিলেন সংসদে। এক শক্তিশালী, নিরাপদ, উন্নত ও সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে সঙ্গে নিয়ে চলা দেশ গঠনের স্বপ্ন পূরণে একযোগে এগিয়ে চলার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেস-ইউপিএকে ইঙ্গিত করে মোদি বলেন, ২০১৪-য় আমাদের দেশ চালানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, কেননা মানুষ মনে করেছিলেন, এর ফলে ওদের থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমি ভোটে জেতা, হারাকে ছাড়িয়ে ভাবতে ভালবাসি। দেশবাসীর সমৃদ্ধির জন্য প্রয়াস চালাই। আমজনতার কল্যাণ আর আধুনিক পরিকাঠামোর বিকাশ, আমরা দুটি লক্ষ্য পূরণেই কাজ করেছি। আমার কাছে ১৩০ কোটি ভারতবাসীর সেবা করার সুযোগ পাওয়া, আমাদের নাগরিকদের জীবনে ইতিবাচক বদল ঘটানোর মতো কাজ করতে পারাটা বিরাট পরিতৃপ্তির ব্যাপার।
কংগ্রেসের সমালোচনার উত্তরে তাদের পাল্টা কটাক্ষ করে মোদি বলেন, আমরা আপনাদের মতো উঁচুতে ওঠা মানুষ হতে চাই না, শিকড়ের সঙ্গে যোগ ধরে রাখতে চাই। আপনারা এত উপরে উঠে গিয়েছেন যে, মাটির দিকে তাকাতে পারেন না। মাটিতে থাকা লোকজনকে ছোট, তাত্পর্য্যহীন বলে ভাবেন।