নয়াদিল্লি: ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার (ডিসিজিআই) নোটিসের পরেই ভারতেও সাময়িক ভাবে অক্সফোর্ড-অ্য়াস্ট্রাজেনেকা যৌথ উদ্য়োগে তৈরি করোনা প্রতিষেধক কোভিশিল্ডের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা বন্ধ করল সিরাম ইন্সস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া।


আগামী সপ্তাহে এই পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে চারটি দেশে আপাতত তাদের পরীক্ষা বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে।


দুটি ধাপের পরীক্ষা পেরোলেও তৃতীয় ধাপে টিকা নেওয়ার ফলে ব্রিটেনে অসু্স্থ হয়ে পড়েছেন এক মহিলা স্বেচ্ছাসেবক। এর জেরেই কোভিশিল্ডের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।


ব্রিটেনে বন্ধ হলেও, ভারতে কেন তা চালু রয়েছে জানতে চেয়ে বুধবার (গতকাল) সিরাম ইন্সস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়াকে নোটিস পাঠিয়েছিল ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া। যদিও বুধবার এসআইআইয়ের তরফে জানানো হয়েছিল ট্রায়াল বন্ধ করার কথা ভাবছে না তারা।


ভারতে সিরাম ইন্সস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে যৌথ ভাবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও সুইডিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রজেনেকার তৈরি প্রতিষেধক কোভিশিল্ডের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হওয়ার কথা ছিল।


দুটি ধাপের পরীক্ষা নির্বিঘ্নে মিটলেও তৃতীয় পর্বে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ব্রিটেনের এক স্বেচ্ছাসেবক। এর জেরেই প্রতিষেধক তৈরি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। ব্রিটেনের ওই স্বেচ্ছাসেবকের সম্পর্কে সিরাম ইন্সস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার কাছে বিশদে জানতে চেয়েছিল ডিসিজিআই। সুরক্ষা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কেন ওই পরীক্ষা চালু থাকবে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে ডিসিজিআই।


তবে বুধবার এসআইআই বলেছিল, ’’ভারতে এই পরীক্ষা চলবে। আমরা কোনও সমস্যার মুখে পড়িনি।‘‘ তাদের ট্যুইটার হ্যান্ডলে এ কথা জানানো হয়েছিল। তবে ডিসিজিআইয়ের উদ্বেগের কথা মাথায় রেখে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছিল তারা ডিসিজিআইয়ের নির্দেশিকা মেনে চলবে। পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ক্ষেত্রে সমস্ত নিয়ম এবং প্রোটকল মেনে চলতে তারা বাধ্য। তবে ট্রায়াল বন্ধ হচ্ছে না।


তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফের অবস্থান বদল করল সিরাম ইন্সস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। সংস্থার প্রধান আদার পুনাওয়ালা বলেছেন, ’’আমরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছি। অ্যাস্ট্রাজেনেকা পরীক্ষা শুরু না করা পর্যন্ত আমরাও পরীক্ষা বন্ধ রাখছি।‘‘


ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার নির্দেশিকা মেনে তাঁরা চলবেন জানিয়েছেন এসআইআই প্রধান। ট্রায়াল সম্পর্কে তাদের পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছে এসআইআই।


ব্রিটেনে একে স্বেচ্ছাসেবক অসুস্থ হয়ে পড়ার পরে অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের ট্রায়াল আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে। ওই ব্যক্তির অসুস্থতা অন্য কোনও কারণে নাকি পরীক্ষার ফলস্বরূপ সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরেই তারা এগোবে।


ইউ এস ন্যাশনাল ইন্সস্টিটিউট অব হেলথ-এর ডিরেক্টর ফ্রান্সিস কলিন বলেছেন, ’’মেরুদণ্ডে সমস্যা দেখা দেওয়ার ফলে অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের পরীক্ষা সাময়িক ভাবে বন্ধ রেখেছে। যদি দেখা যায় টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলে এ ধরনের অসুস্থতা দেখা দিয়েছে, তা হলে এখন পর্যন্ত যত ডোজ বানানো হয়েছে সব বাতিল করে দেওয়া হবে।‘‘


অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে এই টিকা তৈরির জন্য জুনে চুক্তি করেছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা সিরাম ইন্সস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। কম ও মধ্য রোজগারের দেশগুলিকে করোনা–টিকা সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রাও ছিল তাদের।