নয়াদিল্লি: আগামী মাসের মধ্যেই ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমে ১০ হাজারের মধ্যে চলে আসবে। বিশেষজ্ঞরা এমনই আশা করছেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের গড়া ন্যাশনাল সুপারমডেল কমিটির সদস্যরা যে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন, তাতে বলা হয়েছে, মার্চের শেষদিকে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কমে যাবে।
এই বিশেষজ্ঞ কমিটিতে আছেন চেন্নাই ম্যাথামেটিক্যাল ইনস্টিটিউটের রাজীবা এল কারান্ডিকার, সিএসআইআর-এর সদর দফতরের ড. শেখর সি মান্ডে এবং আইআইটি হায়দরাবাদের অধ্যাপক এম বিদ্যাসাগর। তাঁরা যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন, তাতে লেখা হয়েছে, ‘সেরোলজিক্যাল সার্ভে এবং অনুমান বলছে, ভারতের বেশিরভাগ মানুষের শরীরেই করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো ক্ষমতা তৈরি হয়ে গিয়েছে। এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠেছে বলেই মার্চের মধ্যে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, ‘ভ্যাকসিনের মাধ্যমেই করোনা প্রতিরোধের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে সংক্রমণের বদলে ভ্যাকসিনের মাধ্যমেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি শক্তিশালী হচ্ছে। ফলে করোনা সংক্রমণে মোকাবিলায় সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হল ভ্যাকসিন। কেউ করোনা আক্রান্ত হলে তাঁর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু কয়েকজন গবেষক বলছেন, ভ্যাকসিন দেওয়া হলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যতটা গড়ে ওঠে, তার চেয়ে অ্যান্টিবডির মাধ্যমে করোনা মোকাবিলার ক্ষমতা অনেকটাই কম।’
তবে মার্চের মধ্যে করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ার কথা বললেও, দ্বিতীয় ধাক্কার বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা সতর্কও করে দিচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, ‘এখনও পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তার ভিত্তিতে বলা যায়, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতে সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি ছিল। ১১ সেপ্টেম্বর করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯৭,৬৫৫। তারপর থেকে ধীরে ধীরে সংক্রমণের হার কমেছে। এ মাসের প্রথম সপ্তাহে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১,৯২৪। তার মধ্যে অর্ধেকই ছিল কেরলে। এই পরিসংখ্যান থেকে বলা যায়, করোনার বিরুদ্ধে আমাদের প্রথম ধাপের লড়াই শেষ হয়েছে। ইতালি, ইউ কে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলিতে যেভাবে ফের সংক্রমণ বাড়ছে, সেটা যাতে ভারতে না হয়, এটা নিশ্চিত করতে হবে।’
ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মত হল, ‘ভ্যাকসিন যদি মানুষের শরীরে ৪০ শতাংশ কাজ করে, তাহলেও করোনার বিরুদ্ধে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন ৮০ শতাংশ কাজ করলেও, করোনার বিরুদ্ধে তেমন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে না। ফলে ভ্যাকসিনের বিষয়ে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের উপরেই ভরসা রাখতে হবে।’