নেটদুনিয়ায় এই ভিডিও ফুটেজ সামনে আসতেই হৈচৈ পড়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে। বরেলি শহরে ঢোকার আগের চেকপোস্টে বাস থামিয়ে নামিয়ে আনা হয় শ্রমিক ও তাদের পরিবারদের। তারপর সকলকে একসঙ্গে রাস্তায় বসিয়ে হোসপাইপ দিয়ে স্প্রে করা হয় জীবাণুনাশক! সমস্ত জিনিসপত্র-সহ ওই জীবাণুনাশকেই আপাদমস্তক স্নান করতে বাধ্য হন সকলে। পুরো ঘটনার ভিডিও মোবাইল ফোনে রেকর্ড করতে দেখা যায় দুজন পুলিশ কর্মীকে। এমনকী, একজন পুলিশকে শ্রমিকদের চোখ বন্ধ করতে নির্দেশ দিতেও শোনা যায়।
যদিও পরে সাফাই দিয়েছেন বরেলিতে করোনা পরিস্থিতির দায়িত্বে থাকা নোডাল অফিসার অশোক গৌতম। তিনি বলেছেন, ‘জলের সঙ্গে ক্লোরিন ও স্যানিটাইজার মিশিয়ে স্প্রে করা হয় শ্রমিকদের ওপর। এটা কোনও রাসায়নিক নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন রাজ্য থেকে বিপুল পরিমাণে শ্রমিক রাজ্যে ফিরছেন। তাই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে এই পদ্ধতিই অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তবে নজর রাখা হয়েছিল শ্রমিকদের সুরক্ষার দিকেও। স্প্রে করার আগে তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল চোখ বন্ধ করার। যদি শ্রমিকদের পোশাকে কোনওপ্রকার জীবাণু থেকে থাকে তবে এই পদ্ধতিতেই তা নষ্ট হয়ে যাবে। জলে ভেজা এমন কোনও বড় ব্যাপার নয়।’
বরেলির মেডিক্যাল অফিসার আশুতোষ পরাশরি বলেন, ‘ওই শ্রমিকদের ওপর হাইপোক্লোরাইট মিশ্রন স্প্রে করা হয়েছে। জীবাণুনাশক হিসাবে ব্যবহার করা হয় এই সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট। এই মিশ্রণ তেমন কিছু ক্ষতিকারক নয়।’
এই ভিডিও ফুটেজ সামনে আসতেই নিন্দার ঝড় ওঠে। নিজের ট্যুইটার হ্যান্ডল থেকে এই ভিডিওটি শেয়ার করে যোগী সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢড়া। তিনি লেখেন, ‘উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে আবেদন করছি যে, এই বিপদের বিরুদ্ধে যখন সকলে মিলে লড়াই করছি তখন এমন অমানবিক কাজ করবেন না। শ্রমিকেরা এমনিতেই অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন। ওঁদের রাসায়ানিক দিয়ে এভাবে স্নান করাবেন না। এতে ওঁরা বাঁচবেন না। উল্টে ওঁদের স্বাস্থ্য বিপন্ন হয়ে পড়বে।’
ঘটনার নিন্দা করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন বরেলির জেলাশাসক নীতিশ কুমার। তিনি বলেন, ‘বরেলি পুরসভার কাছে নির্দেশ ছিল ওই বাসটিকে স্যানিটাইজ করার। তার বদলে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা। শ্রমিকদের বাধ্য করা হয়েছে খোলা রাস্তায় স্যানিটাইজারে স্নান করতে! এর সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।’