নয়াদিল্লি: বিশ্বের তৃতীয় দেশ হিসেবে ভারতে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা চার লক্ষ ছাড়াল। শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা গিয়েছে যে, ভারতে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৩১২। মৃতের সংখ্যার নিরিখে  বিশ্বে আমেরিকা ও ব্রাজিলের পর ভারত তৃতীয়। এদিকে, ভারতে করোনার বিরুদ্ধে টিকাকরণ অভিযানও মন্থর হয়েছে। 
অনেক বিশেষজ্ঞরই সন্দেহে, ভারতের প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা আরও অনেক বেশি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ দেশে গত এপ্রিল ও মে মাসে আছড়ে পড়েছিল। হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসার জন্য বেড ও অক্সিজেনের অভাব দেখা দিয়েছিল। আচমকাই করোনা আক্রান্তর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছিল। হাসপাতালগুলি বেড অপ্রতুল হয়ে ওঠে। দেখা যায় অক্সিজেনের সংকট। দ্বিতীয় দফার এই ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার জন্য সরকারের আত্মসন্তুষ্টির মনোভাবকে দায়ী করেছেন অনেক বিশেষজ্ঞই। 
বর্তমানে করোনা আক্রান্তর সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ রুখতে বিভিন্ন রাজ্যে জারি হয়েছিল বিধিনিষেধ। সেই বিধিনিষেধ ধীরে ধীরে বিভিন্ন রাজ্য়েই প্রত্যাহার করা হচ্ছে। ফলে আগামীমাসগুলিতে ফের সংক্রমণের প্রকোপ বাড়ার একটা আশঙ্কাও করা হচ্ছে। 
সরকার চলতি বছরের মধ্যে দেশের ১০০ কোটির বেশি টিকা করণের লক্ষ্য গ্রহণ করেছে। কিন্তু ভ্যাকসিনের যোগানের অভাব, প্রশাসনিক ক্ষেত্রে ধোঁয়াশা ও ইতস্তত মনোভাবের কারণে এখনও পর্যন্ত জনসংখ্যার মাত্র পাঁচ শতাংশর মতো করোনা টিকার দুটি ডোজ পেয়েছেন। 
গত ২১ জুন থেকে সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নিখরচায় ভ্যাকসিন প্রদানের ঘোষণা করে এই অভিযানে গতি আনার চেষ্টা করেছিল। এরফলে ভ্যাকসিনের চাহিদা প্রচুর পেয়ে যায়। এমনকি একটি দিনে ৯০ লক্ষ টিকাকরণও হয়েছিল। 
তারপর থেকে দৈনিক টিকাকরণের সংখ্যা কমেছে। গত সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ৪০ লক্ষ করে টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যানে এ কথা জানা গিয়েছে। 
চলতি সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে সরকারের পক্ষ থেকে যে হলফনামা দায়ের হয়েছে, সেখানে  আগামী অগাস্ট থেকে  ডিসেম্বরের মধ্যে যতগুলি টিকার ডোজ ডিসেম্বরের মধ্যে দেওয়া যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে, সেই সংখ্যা ২.৩৫ বিলিয়ন থেকে কমিয়ে ১.৩৫ বিলিয়ন করা হয়েছে। 
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে বলা হয়েছে যে, মে মাসে আটটি ভ্যাকসিনের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। তা এখন কমিয়ে করা হয়েছে পাঁচটি। অ্যাস্ট্রাজেনিকার ডোজের পূর্বাভাস ৭৫০ মিলিয়ন থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ৫০০ মিলিয়ন।
গত মঙ্গলবার দেশে মডার্নার ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। শ্রীরাম ইন্সস্টিটিউটের কোভিশিল্ড, ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন ও রাশিয়ার স্পুটনিক ভি-র পর এই ভ্যাকসিন ভারতে ছাড়পত্র পেয়েছে।