কলকাতা: রাজ্যজুড়ে আজ থেকেই চালু হয়েছে কার্যত লকডাউন।করোনা বিধি নিষেধে আরও কড়াকড়ি করা হয়েছে আজ থেকে। চলবে ৩০ মে পর্যন্ত। এর আগেই রাজ্য সরকার সমস্ত লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছিল। এদিন পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে সমস্ত লোকাল, শহরতলি ও ইএসইউ ট্রেন পরিষেবা পরবর্তী পরামর্শ পর্যন্ত বন্ধই থাকবে। অন্যান্য স্পেশ্যাল ট্রেন, মেল ও এক্সপ্রেস স্পেশ্যাল ট্রেন, পার্সেল ট্রেন ও পণ্যবাহী ট্রেন পরিষেবা নির্ধারিত সূচী অনুযায়ী চলবে। 



উল্লেখ্য, গত পাঁচ মে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তৃতীয়বার শপথ গ্রহণের পর    করোনা রুখতে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এর মধ্যে গণ পরিবহনের ক্ষেত্রে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকবে। ৬ মে থেকেই সমস্ত লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরও জানিয়েছিলেন যে,  সংখ্যায় অর্ধেক হবে রাজ্য পরিবহণের বাস ও মেট্রো।
গতকাল মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় করোনা রুখতে বিধিনিষেধে আরও কড়াকড়ির ঘোষণা করেন। এই ঘোষণা কার্যত লকডাউন। আজ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ বহাল থাকবে বলে জানানো হয়। 


সারা দেশের সঙ্গে এ রাজ্যেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের দাপট চলছে। সংক্রমণের চেন ভেঙে ভয়ঙ্কর এই পরিস্থিতিতে লাগাম টানতে ১৫ দিনের জন্য কড়া পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার।গতকাল জানানো হয়, রবিবার সকাল ৬টা থেকে ৩০ মে, সন্ধে ৬টা পর্যন্ত কার্যত লকডাউন জারি থাকবে রাজ্যে।


৩০ মে পর্যন্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়-সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। জরুরি পরিষেবার দফতর ছাড়া বন্ধ থাকবে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি অফিস। জরুরি সামগ্রীর উৎপাদন ছাড়া বন্ধ থাকবে কল কারখানা।আগের মতোই বন্ধ থাকবে সিনেমা হল, রেস্তোরাঁ, শপিং মল, জিম, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, স্পা। করা যাবে না কোনওরকম জমায়েত। বিয়ে বাড়িতে ৫০ জনের বেশি আমন্ত্রণ করা যাবে না।সৎকারে থাকতে পারবেন না ২০ জনের বেশি ।জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে বেরনো যাবে না।দু-বেলা নয়, ৩০ মে পর্যন্ত এক বেলা খোলা থাকবে বাজার হাট। 
বাজার-হাট, মুদি দোকান, দুধ, রুটি, মাংস, ডিমের দোকান খোলা থাকবে সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত।
মিষ্টির দোকান খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।গয়না এবং শাড়ির দোকান খোলা থাকবে বেলা ১২টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত।তবে সাধারণ দিনের মতোই ওষুধ ও চশমার দোকান খোলা থাকবে। ই-কমার্স এবং হোম-ডেলিভারি পরিষেবা চালু থাকবে।
শনিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৩০ মে পর্যন্ত লোকাল ট্রেনের সঙ্গে সঙ্গে মেট্রো, বাস, ফেরি চলাচলও বন্ধ থাকবে।তবে হাসপাতাল, নার্সিংহোম, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ভ্যাকসিনেশন সেন্টার ও অন্যান্য জরুরি পরিষেবার জন্য ব্যাক্তিগত গাড়ি, ট্যাক্সি, অটো চলাচলে ছাড় দেওয়া হয়েছে।তবে ৩০ মে পর্যন্ত কার্যত লকডাউনে, জরুরি পরিষেবা ছাড়া পণ্য পরিবহণ বন্ধ থাকবে।বন্ধ থাকবে পার্ক, চিড়িয়াখানা, স্যাংচুয়ারি।
১৫ দিন কার্যত লকডাউন ঘোষণা হলেও, রাজ্যের অর্থনীতি যাতে একেবারে ধসে না পড়ে সেদিকে নজর দিয়ে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত খোলা থাকবে ব্যাঙ্ক। তবে ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে এটিএম। প্রতি শিফটে ৫০ শতাংশ শ্রমিক নিয়ে চা বাগানগুলি খোলা থাকবে।৩০ শতাংশ শ্রমিক নিয়ে জুট মিলগুলি চালু রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।


 


বিস্তারিত আসছে...