নয়াদিল্লি: দেশ কঠিন অবস্থার মধ্যে রয়েছে। হিংসা মাথাচাড়া দিয়েছে। এই অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া পিটিশনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়া উচিত নয় বলে অভিমত জানালেন দেশের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে। গত মাসে সংসদে সিলমোহর পড়েছে বিতর্কিত নাগরিকত্ব (সংশোধনী)বিলে। তা আইনে পরিণত হয়েছে। এতে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান-এই তিন প্রতিবেশী দেশ থেকে ধর্মীয় নির্যাতন এড়াতে ২০১৪র ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতে পালিয়ে আসা অ-মুসলিম সংখ্যালঘুদের দ্রুত এ দেশের নাগরিকত্ব প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আইনটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একাধিক পিটিশন পেশ হয়েছে বিভিন্ন আদালতে। তবে এবার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জমা দিয়ে বলা হল, সিএএ-কে সংবিধানসম্মত ঘোষণা করা হোক। তবে এই পিটিশনের দ্রুত শুনানির আবেদন খারিজ করেছে শীর্ষ আদালত।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এহেন পিটিশনে বিস্ময় প্রকাশ করে জানিয়েছে, এই প্রথম কেউ একটা আইনকে সাংবিধানিক বলে ঘোষণার দাবি করলেন! প্রধান বিচারপতি বোবদে বলেছেন, চারদিকে এত হিংসা ঘটছে। দেশ একটা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। তাই চেষ্টা থাকা উচিত যাতে শান্তি কায়েম হয়। আদালতের কাজ একটা আইন বৈধ কিনা, খতিয়ে দেখে স্থির করা, তাকে সাংবিধানিক ঘোষণা করা নয়।
গত মাসে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলটি পাশ হওয়ার পরই দেশজুড়ে তীব্র বিক্ষোভ, প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। কোথাও কোথাও তা ব্যাপক হিংসাত্মক চেহারা নেয়। সেদিকেই সম্ভবত ইঙ্গিত করলেন প্রধান বিচারপতি।
হিংসা থামার পরই সিএএ-কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পেশ করা একাধিক পিটিশনের শুনানি করবে বলে জানিয়েছে বেঞ্চ, যার বাকি দুই সদস্য হলেন বিচারপতিদ্বয় বি আর গাভাই ও সূর্য্যকান্ত।
বিনীত ধান্দা নামে জনৈক আইনজীবী সিএএ-কে সংবিধানসম্মত ঘোষণার পাশাপাশি সেটি সব রাজ্যকে রূপায়ণের নির্দেশ দিতে বলার আবেদন জানান তাঁর পিটিশনে। এই আইন নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ তুলে সমাজকর্মী, পড়ুয়া, একাধিক সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও করা হয়েছে পিটিশনে।
গত ১৮ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছিল, তারা সিএএ-র সাংবিধানিক বৈধতা খতিয়ে দেখতে রাজি, তবে তার প্রয়োগে স্থগিতাদেশ জারি করার দাবি খারিজ করে দেয়।
প্রধান বিচারপতি বোবদের বোর্ড আইইউএমএল, কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের আবেদন সহ ৫৯টি পিটিশনের একসঙ্গে শুনানি স্থির করেছিল ২২ জানুয়ারি। আরজেডি নেতা মনোজ ঝা, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, এআইএমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়েইসি সহ একাধিক রাজনৈতিক নেতা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। এতে ধর্মের মাপকাঠিতে নাগরিকত্ব প্রদানে বৈষম্য করা হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ।