নয়াদিল্লি: ২৯ জুনের পর দেশে করোনায় দৈনিক সংক্রমণ নামল ৪০ হাজারের নীচে। গত ২৪ ঘণ্টায় কমল দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সোমবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৭২৩ জনের। একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯ হাজার ৭৯৬।  একদিনে সুস্থতার সংখ্যা ৪২ হাজার ৩৫২।করোনা সংক্রমণের হার কমায় বিভিন্ন রাজ্যে বিধিনিষেধে কিছুটা ছাড় দিয়েছে। 
এখন দেখে নেওয়া যাক-কোন রাজ্যগুলিতে বিধিনিষেধে ছাড় দেওয়া হয়েছে এবং কোন রাজ্যগুলিতে বিধিনিষেধ বহাল থাকছে।


দিল্লি


মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের সরকার রবিবার জানিয়েছিল যে, সোমবার থেকে জাতীয় রাজধানীতে স্টেডিয়াম ও ক্রীড়া কেন্দ্রগুলি খোলার অনুমতি দেওয়া হবে। তবে সেগুলি দর্শকশূন্য রাখতে হবে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ রুখতে ছয় সপ্তাহের লকডাউনের পর দিল্লিতে পর্যায়ক্রমিক আনলকের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দিল্লি সরকার অর্থনৈতিক কাজকর্ম শুরুর অনুমতি দিয়েছে। তবে স্পা, সিনেমা, মাল্টিপ্লেক্স ও সুইমিং পুল খোলার ক্ষেত্রে এখনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। ডিডিএমএ নির্দেশিকা জারি করে বলেছ, সিনেমা, থিয়েটারস মাল্টিপ্লেক্স, ব্যাঙ্কোয়েট হল, সামাজিক ও রাজনৈতিক সমাবেশ, অডিটোরিয়াম, সুইমিং পুল, স্কুল, কলেজ স্পা, বিনোদন পার্ক বন্ধই থাকবে। গত সপ্তাহে ৫০ শতাংশ উপস্থিতি নিয়ে জিম ও যোগ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলি খোলার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। বিয়ের হল ও হোটেলগুলিতে বিয়ের ক্ষেত্রে মাত্র ৫০ জন অতিথি সমাগমের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। 


উত্তরপ্রদেশ


উত্তরপ্রদেশ সরকারও বিধিনিষেধ শিথিল করেছে। আজ অর্থাৎ ৫ জুলাই থেকে কঠোর করোনা প্রোটোকল মেনে মাল্টিপ্লেক্স, সিনেমা হল, জিম ও ক্রীড়া স্টেডিয়ামগুলি খোলার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। যদিও রাজ্য সাপ্তাহিক লকডাউন অব্যাহত থাকবে। গত ২১ জুন থেকে রাজ্যে মল, রেস্তোরাঁ, বার ও রাস্তার ফুড স্টলগুলি খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে সমস্ত ক্ষেত্রেই সর্বাধিক ধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশ উপস্থিত থাকতে পারবে।  নৈশ কার্ফুর মেয়াদও দুই ঘণ্টা কমানো হয়েছে। সপ্তাহান্তে কার্ফু বহাল থাকছে শুক্রবার রাত ৯ টা থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত। 


হরিয়ানা


হরিয়ানা রবিবার রাজ্যে লকডাউনের মেয়াগ ১২ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এক্ষেত্রে পরীক্ষা গ্রহণ সহ কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যসচিবের জারি করা নির্দেশিকা অনুযায়ী, ১২ জুলাই পর্যন্ত রাজ্যে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। এর আগের ছাড়পত্র অনুযায়ী, সমস্ত দোকানপাট সকাল ৯ টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। হোটেল, মল সহ রেস্তোঁরা, বার ধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশ উপস্থিতি নিয়ে সকাল ১০ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত খোলা থাকতে পারে। আগের সপ্তাহের এই ছাড়গুলির সঙ্গে সরকার খেলাধূলোর জন্য স্পোর্টস কমপ্লেক্স ও স্টেডিয়াম খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যদিও সেখানে দর্শক থাকতে পারবেন না।


কর্ণাটক


বিএস ইয়েদুরাপ্পার নেতৃত্বাধীন কর্ণাটক সরকার করোনাজনিত বিধিনিষেধ আরও শিথিলের কথা শনিবার ঘোষণা করা হয়েছে। ধর্মীয় স্থল খোলা ও বিয়ের অনুষ্ঠান সহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে।আগামীকাল থেকে পরবর্তী ১৫ দিনের জন্য এই শিথিলতা দেওয়া হয়েছে। নৈশ কার্ফু আগের মতোই রাত ৯ টা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত জারি থাকবে। জেলাগুলির ডেপুটি কমিশনাররা পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে অতিরিক্ত বিধিনিষেধ জারি করতে পারেন। 


গোয়া


গোয়া সরকার করোনা সংক্রান্ত লকডাউন ১২ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়েছে। যদিও সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, বিয়ের অনুষ্ঠান সহ অন্যান্য জমায়েতের ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে। বার ও রেস্তোরাঁগুলির ক্ষেত্রে কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে। আসন ক্ষমতার ৫০ শতাংশ নিয়ে বার ও রেস্তোরাঁগুলি খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে গোয়ার ক্যাসিনোগুলি ১২ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। গত ৯ মে কার্ফু জারি হয়েছিল। তারপর থেকে বেশ কয়েকবার এর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।