বৃহস্পতিবার বাড়িতে পা দিতেই ছুটে এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরে দুই মেয়ে। স্ত্রী আরতি করেন, কপালে এঁকে দেন তিলক। বাবাকে কাছে পাওয়ার আবেগমাখা মূহূর্তগুলো ভিডিওবন্দি করে রাখে ছেলে। ১৭ মার্চের পর প্রথম পরিবারে ফিরলেন যে! শুরুতে পাছে পরিবারের লোকজনের মধ্যেও কোভিড-১৯ ভাইরাস ছড়ায়, এই ভয়ে বাড়ি ফিরতেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, আমার বাবা-মা, দুজনেরই বয়স ৭৫ এর ওপর। ওঁদের ঝুঁকির মুখে ঠেলতে চাইনি। আর পরে এত ভাইরাস দ্রুত ছড়াতে শুরু করল, দিনদিন করোনা আক্রান্ত লোকজনের হাসপাতালে ভিড় বাড়তে থাকল যে, তাঁদের পিছনে সময় দিতে গিয়ে বাড়ির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করাও অসম্ভব হয়ে উঠল। মেয়েরা প্রায়ই জানতে চাইত, বাবা কবে বাড়ি ফিরবে? ডঃ জৈন বলেছেন, লোকের জীবন বাঁচানো ছিল প্রথম অগ্রাধিকার। এত কিছু হচ্ছিল। রাত একটা, দুটোয় হয়তো বাড়ির সঙ্গে কথা বলার ফুরসত মিলত।
এক মেয়ে আরুষি জৈন জানিয়েছেন, দিল্লিতে ভাইরাস সংক্রমণ ক্রমশঃ বাড়তে থাকায় তাঁরাও গভীর উদ্বেগে কাটাতেন। বেশ কয়েকজন ডাক্তারও ভাইরাসে কাবু হয়ে মারা যাওয়ায় উদ্বেগ পরিণত হয় আতঙ্ক, ভয়ে। প্রতিদিন বাবার সঙ্গে ৫ মিনিট কথা বলার জন্য রাত ২টো পর্যন্তও জেগে থাকতেন। দিল্লি সরকার ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীদের লীলা অ্যাম্বিয়েন্স হোটেলে থাকার বন্দোবস্ত করলেও ডঃ জৈন সেখানে না গিয়ে রোগীদের চিকিত্সায় বিনিদ্র রজনী কাটাতেন হাসপাতালেই। নিজের ফোন নম্বরও দিয়ে রেখেছিলেন কোভিড-১৯ রোগীদের। ৫ মিনিট অন্তরই বেজে উঠত ফোন। প্রথম তিন মাস
টানা ১৫ মিনিট ঘুমোতেই পারেননি রোগীদের সঙ্গে কথা বলতে হত বলে। এমনকী ১৫০০ এর বেশি রোগী যাতে প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারে, সেজন্য নিজে একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও খুলেছিলেন।