লন্ডন: বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হল প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামরনের লেখা বই ‘ফর দ্য রেকর্ড’। ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর জীবনের নানান অভিজ্ঞতার কথাই এই বইতে তুলে ধরেছেন ডেভিড ক্যামেরন। সেখানে স্থান পেয়েছে ভারতের প্রাক্তন ও বর্তমান দুই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ক্যামেরনের সাক্ষাতের কিছু অভিজ্ঞতাও। ডঃ মনমোহন সিংহ এবং নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে নিজের বার্তালাপের কথাই ‘ফর দ্য রেকর্ড’-এ তুলে ধরেছেন প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ডেভিড ক্যামেরন দাবি করেছেন, ডঃ মনমোহন সিংহ পাকিস্তানে হামলার ভাবনার কথা তাঁকে জানিয়েছিলেন।
২০০৮ সালে মুম্বইয়ের পাঁচ তারা হোটেলে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছিল পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। এই ন্যক্কারজনক ঘটনার সাক্ষী ছিল গোটা বিশ্ব। সেসময় দেশে সরকার চালাচ্ছিল ইউপিএ-টু জোট এবং প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ডঃ মনমোহন সিংহ। এই ঘটনার বছর তিনেক পর ভারতে এসেছিলেন ডেভিড ক্যামেরন। তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে ডঃ মনমোহন জানিয়েছিলেন, মুম্বই সন্ত্রাস হামলার মতো আরও কোনও ঘটনা ঘটলে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। ‘ফর দ্য রেকর্ড’-এ এমনটাই দাবি করেছেন ক্যামেরন।
৫২ বছর বয়সী ব্রিটিশ রাজনীতিক ভারতের সঙ্গে তাঁর দেশের বন্ধুতার কথাও উল্লেখ করেছেন। ঔপনিবেশিক মানসিকতার অবসান ঘটিয়ে বিশ্বের প্রাচীন গণতন্ত্র ও সর্ববহৎ গণতন্ত্রের মধ্যে সৌভ্রাতৃত্বমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি। ক্যামেরন এও বলেন, ব্রিটেনের এমন অনেক সফল ব্যবসায়ীই রয়েছেন, যারা প্রবাসী ভারতীয়। তাঁরা এই মৈত্রীর অন্যতম মধ্যস্থতাকারি হতে পারেন বলেও মত তাঁর। এই প্রসঙ্গেই ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের কথাও তুলে ধরেছেন প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রদানমন্ত্রী। মোদীকে অভ্যর্থনা জানাতে সেবার (২০১৫) ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিল ৬০ হাজার প্রবাসী ভারতীয়। তাঁদের উষ্ণ অভিবাদনে অভিভূত হয়েছিলেন স্বয়ং মোদি। জনতার চিল চিৎকার, উন্মাদনা দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন ক্যামেরনও।
প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ প্রধামনন্ত্রীদের মধ্যে ডেভিড ক্যামেরনই প্রথম, যিনি ব্রিটিশ রাজত্বের সময় ঘটে যাওয়া জালিয়ানওয়ালাবাগ গণহত্যার নিন্দা করে অনুতাপ প্রকাশ করেন।
২০১৬ সালে ব্রিটেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার পক্ষে রায় দিলে, প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেন ডেভিড ক্যামেরন। তাঁর ছেড়ে যাওয়া পদে স্থলাভিষেক হয় থেরেসা মে-র। পরে তিনিও সেই পদ ছেড়ে দিলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হন বরিস জনসন।