নয়াদিল্লি: ধাপে ধাপে স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি সরকার। ১ সেপ্টেম্বর থেকে খুলছে স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার। আপাতত স্কুলে শুধু নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারাই যেতে পারবে। কোনও পড়ুয়াকেই স্কুলে যাওয়ার জন্য জোর করা হবে না বলে জানিয়েছেন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ শিশোদিয়া।


দিল্লি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে অবশ্য সমর্থন করছেন না চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁদের মতে, স্কুল খোলার বিষয়ে তাড়াহুড়ো করা উচিত নয়। যে পড়ুয়ারা স্কুলে যাবে, তাদের টিকাকরণ হয়নি বলেই ধরে নিতে হবে সরকারকে।


এইমসের মেডিসিন বিভাগের প্রধান, অধ্যাপক ড. নবীত উইগ জানিয়েছেন, ‘স্কুল খোলার ফলে কতটা লাভ হবে এবং কতটা ঝুঁকি থেকে যাবে, সেটা ভেবে দেখতে হবে। সবদিক খতিয়ে দেখে তবেই স্কুল খোলা উচিত। লাগাতার এ বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করতে হবে। আরও অনেক টিকা আসবে এবং মানুষকে আরও টিকা দেওয়া হবে। যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হল, সবাইকে টিকা নিতে হবে। কারণ, যতদিন না সবাই টিকা নিচ্ছেন এবং সতর্কতা মেনে চলছেন, ততদিন আমরা এই দেশকে করোনামুক্ত করতে পারব না।’


স্কুল খোলা প্রসঙ্গে ড. উইগ আরও বলেছেন, ‘একটানা বাড়িতে থেকে শিশুরা হাঁফিয়ে উঠেছে। ওরা আর পারছে না। কিন্তু আমাদের ঝুঁকির বিষয়টিও ভুলে গেলে চলবে না। তাছাড়া এখনও শিশুদের টিকাকরণ হয়নি। যাতায়াত, একে অপরের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা, আইসোলেশনের মতো বিষয়গুলিও মাথায় রাখতে হবে। শিশুদের উপর স্নায়বিক প্রভাবের বিষয়টিও বিবেচনা করতে হবে। শিশুদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের মধ্যে সমতা বজায় রাখতে হবে। এক-দু’মাসের মধ্যেই উৎসবের মরসুম আসতে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের বাইরের কার্যকলাপের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কোনওভাবেই অসতর্ক হওয়া চলবে না। এর আগে দেখা গিয়েছে, গাছাড়া মনোভাবের ফলে সংক্রমণ বেড়ে গিয়েছে। আজ আমাদের দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪৬ হাজার। এখন একটি বা দু’টি রাজ্যে পরিস্থিতি জটিল। অন্য রাজ্যগুলিতেও একই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।’


দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১ সেপ্টেম্বর থেকে সব সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, কোচিং ক্লাস খোলার অনুমতি দেওয়া হবে। তবে স্কুলে যাওয়ার আগে শিশুদের অভিভাবকের সম্মতিপত্র বাধ্যতামূলক। কোনও পড়ুয়াকে স্কুলে যাওয়ার জন্য জোর করা হবে না। কেউ স্কুলে যেতে রাজি না হলে তাকে অনুপস্থিত হিসেবে দেখানোও চলবে না। স্কুলে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।