নয়াদিল্লি: নোটবন্দির তৃতীয় বর্ষপূর্তির দিন মোদি সরকারের উদ্দেশ্যে ধেয়ে আসা যাবতীয় বিরোধী-আক্রমণকে নস্যাৎ করল কেন্দ্র। অর্থমন্ত্রকের তরফে পাল্টা দাবি করা হল, ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার এখনও যথেষ্ট।
শুক্রবার, সকাল থেকেই মোদি সরকারকে নিশানা করে কংগ্রেস, তৃণমূল সহ বিরোধী দলগুলি। নোটবন্দির তিনবছর নিয়ে ট্যুইটারে মোদি সরকারকে কটাক্ষ রাহুলের। কংগ্রেস সাংসদ লেখেন, তিনবছর ধরে নোটবন্দি সন্ত্রাসে ভারতীয় অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। জীবন হানির একাধিক ঘটনা ঘটেছে। কয়েকলক্ষ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সর্বস্বান্ত হয়ে গিয়েছেন। আরও কয়েকলক্ষ কর্মচ্যুত হয়েছেন। যারা এই বিপর্যয়ের পিছনে রয়েছে, তাদের বিচার হওয়া দরকার।





নোটবন্দির তিনবছর নিয়ে ট্যুইটারে আক্রমণাত্মক প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। তিনি লিখেছেন, তিনবছর আগে নোটবন্দির সময় থেকে সরকার দাবি করেছিল, যা কিছু খারাপ, তার অবসান হবে। সেই দাবির অসারতা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। উল্টে তা আর্থিক বিপর্যয় ডেকে এনেছে, আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। এর দায় কে নেবে?





নোটবন্দির অন্যতম সমালোচক বলে পরিচিত তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, ২০১৬ সালে আজকের দিনে নোটবন্দি চালু করা হয়। ঘোষণার কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি বলেছিলাম দেশের অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের জীবন এর ফলে বিঘ্নিত হবে। এখন বিশ্বের তাবড় অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ ও বিশেষজ্ঞ,  সবাই একই কথা বলছেন। সেই দিন অর্থনীতির বিপর্যয় শুরু হয়েছিল আর আজ দেখুন কি পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ব্যাঙ্ক সঙ্কটে, অর্থনীতি মন্দায়। সকলে ভুক্তভোগী। কৃষক থেকে মজদুর, ছাত্র থেকে যুব, ব্যবসায়ী থেকে গৃহবধূ - সকলে।









যদিও, বিরোধীদের আক্রমণকে আমল দিতে নারাজ কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেন, ২০১৬ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেওয়া নোটবন্দির সিদ্ধান্ত দুর্নীতির বিরুদ্ধে নেওয়া যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এদিনই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে দাবি করা হয়েছে, বৃদ্ধির হারের নিরিখে সারা বিশ্বের মধ্যে ভারত এখনও অন্যতম। কেন্দ্রের দাবি, আইএমএফ জানিয়েছে, ২০১৯-এ দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৬.১ শতাংশ হতে পারে। ২০২০-তে তা ৭ শতাংশে পৌঁছতে পারে।





পাশাপাশি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, অর্থনীতির ভিত মজুবত করতে সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্বমন্দার কথা মাথায় রেখে সরকার একাধিক নীতিগত সিদ্ধান্তও নিয়েছে। এর ফল ইতিবাচক হবে।
সরাসরি নোটবাতিল বা আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে কিছু না বললেও নরেন্দ্র মোদি এদিন ট্যুইট করেন, মানুষ আমাদের পক্ষে যে রায় দিয়েছেন, তা গত কয়েক দশকে দেখা যায়নি। পাঁচ বছর পর কোনও সরকার ফের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরছে, এমনটা শেষবার ঘটেছে বহু বছর আগে। বিভিন্ন অঞ্চল, ধর্ম, ভাষা, বয়স ও পেশার মানুষ আমাদের আশীর্বাদ দিয়েছেন।





বিজেপি সাংসদ শোভা করন্দলাজে বলেন, যারা গদির নীচে কালো টাকা লুকোতেন, তাদের জন্য ‘কালো দিন’ ছিল নোটবন্দি। বিজেপির আইটি মিডিয়া সেলের প্রধান অমিত মালব্য বলেন, দুর্নীতিগ্রস্তরা কর-ফাঁকি দিত, তারাই সমস্যায় পড়েছে।