নয়াদিল্লি: স্বাধ্বী প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুরকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলায় বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে তাঁর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনার দাবি তোলায় পাল্টা জবাব রাহুল গাঁধীর। মহাত্মা গাঁধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে লোকসভায় ‘দেশভক্ত’ বলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ভোপালের বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে। তীব্র সমালোচনার মুখে আজ মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় অভিযুক্ত প্রজ্ঞা ক্ষমা চেয়েও দাবি করেছেন, গাঁধীকে তিনি শ্রদ্ধা করেন। গডসেকে তিনি দেশভক্ত বলেননি, তাঁর মন্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। বিতর্কের মধ্যেই রাহুল গতকাল মন্তব্য করেছিলেন, সন্ত্রাসবাদী প্রজ্ঞা সন্ত্রাসবাদী গডসেকে দেশভক্ত বলেছেন। এটা ভারতীয় সংসদের লজ্জা! প্রজ্ঞার পাশে দাঁড়িয়ে নিশিকান্ত বলেন, তাঁকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলায় রাহুলের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনা হোক। রাহুলকে এজন্য ক্ষমা চাইতে হবে। শুক্রবার সংসদ ভবন থেকে বেরনোর সময় তাঁকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নিজের বক্তব্যে অনড় রাহুল বলেন, আমি ওঁর সঙ্গে সহমত নই। যা ইচ্ছা করতে পারেন। আমি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছি।
গত বুধবার লোকসভায় এসপিজি আইন সংশোধনী বিলের ওপর বিতর্কের মাঝে ডিএমকে সদস্য এ রাজা কেন তিনি গাঁধীকে হত্যা করেছিলেন, সে ব্যাপারে আদালতে গডসের বিবৃতির ব্যাখ্যা করতে গেলে তাঁকে বাধা দিয়ে প্রজ্ঞা বলেন, একজন ‘দেশভক্তে’র নাম এখানে টানবেন না! এ নিয়ে প্রবল শোরগোল হয়। প্রজ্ঞার মন্তব্য বিজেপি সমর্থন করে না বলে জানান দলের কার্যকরী সভাপতি জেপি নড্ডা। প্রজ্ঞাকে সম্প্রতি প্রতিরক্ষামন্ত্রকের যে পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য করা হয়েছে, সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
আজ প্রজ্ঞা সংসদে দাবি করেন, তাঁর মন্তব্যের প্রেক্ষাপট ছিল আলাদা। গতকাল তিনি বলেছিলেন, গডসে নন, তিনি আরেক স্বাধীনতা সংগ্রামী উধম সিংহকে বোঝাতে চেয়েছিলেন। আজ বলেন, আমার মন্তব্যে কেউ কোনওভাবে আঘাত পেয়ে থাকলে সেজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি, ক্ষমা চাইছি। সভায় আমার মন্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। দেশের প্রতি তাঁর অবদানের জন্য মহাত্মা গাঁধীকে তিনি শ্রদ্ধা করেন বলেও জানান প্রজ্ঞা। সেইসঙ্গে রাহুল সম্পর্কেও ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, একজন সদস্য প্রকাশ্যে আমায় সন্ত্রাসবাদী বলেছেন, যদিও আমায় আদালত রেহাই দিয়েছে। এমন মন্তব্য আইনের পরিপন্থী বলেও দাবি করেন তিনি।
তবে প্রজ্ঞার ক্ষমাপ্রার্থনায় সন্তুষ্ট হতে না পেরে কংগ্রেস সদস্যরা জোরালো প্রতিবাদ করেন, স্লোগান দেন। প্রজ্ঞাকে সাসপেন্ড করার দাবি করেন তাঁরা। সূত্রের খবর, কংগ্রেস ও ইউপিএ অন্য শরিকরা লোকসভায় প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে সেন্সর প্রস্তাব আনতে পারে।