নয়াদিল্লি: সাল ১৬৮৭। আজ থেকে তিনশতাধিক বছর আগে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির আবিষ্কার করেছিলেন বিশ্ববরেণ্য ব্রিটিশ বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটন। ইতিহাস এবং বিজ্ঞান এতদিন এটাই জেনে এসেছে এবং এই সত্যকেই বিশ্বাস করেছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার আর্থিক মন্দা পরিস্থিতি নিয়ে বলতে গিয়ে পীযূষ গয়াল দাবি করলেন, মাধ্যাকার্ষণ শক্তি আবিষ্কার করেছেন আইনস্টাইন। এদিন বাণিজ্য বোর্ডের একটি বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে অর্থনৈতিক মন্দা প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মন্ত্রী গয়াল বলে ফেললেন, “মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আবিষ্কার করার জন্য অঙ্ক আইনস্টাইনকে কোনও সাহায্য করেনি।”


মন্ত্রীর ভাষ্য, “টেলিভিশনে যে অঙ্ক কষাকষি চলছে, তা বিশ্বাস করার প্রয়োজন নেই। ৫ ট্রিলিয়ন ডলার ইকনমির জন্য দেশের প্রতি বছর ১২ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধির প্রয়োজন। এখন দেশ ৬ থেকে ৭ শতাংশই উন্নতি করতে পেরেছে। এই অঙ্কের মধ্যে গিয়ে কোনও লাভ নেই। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আবিষ্কারেও অঙ্ক আইনস্টাইনকে সাহায্য করেনি। যদি তিনি পুরনো জ্ঞান এবং ফর্মুলার ওপরই স্রেফ ভরসা করতেন তাহলে আমার মনে হয় না বিশ্ব কোনও নতুন আবিষ্কার পেত।”





ইতিহাস বলছে, ব্রিটিশ বিজ্ঞানী স্যার আইজক নিউটন জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৬৪৩ সালের ৪ জানুয়ারি। ষোড়শ শতকের শেষ দিকে, ১৬৮৭ সাল নাগাদ তিনি মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কথা বলেন এবং বিশ্বকে তাঁর তত্ত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করান। ১৭২৭ সাল পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর দেড়শো বছর পর জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। ১৯২১ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কারের সম্মান পান তিনি। যদিও সেই পুরস্কার তিনি গ্রহণ করেছিলেন তার ঠিক একবছর পর ১৯২২ সালে। স্পেশ্যাল থিওরি অব রিলেটিভিটি (১৯০৫),  রিলেটিভিটি, জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি (১৯১৬), হোয়াই ওয়ার (১৯৩৩), দ্য ইভোলিউশন অব ফিজিক্স (১৯৩৪) ইত্যাদি বিষয়ের ওপর কাজ করেছেন তিনি।


কংগ্রেস ইতিমধ্যেই পীযূষ গয়ালকে নিয়ে ট্যুইট করেছে। মন্ত্রীকে নিয়ে মশকরা চলছে সোশ্যাল মাধ্যমেও।


অতীতে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষও। তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ‘সহজপাঠ লিখেছেন বিদ্যাসাগর’। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিতে সেবার বিদ্যাসাগরকে কৃতিত্ব দিয়েছিলেন দিলীপ। এবার ওই একই রকম পথে হাঁটলেন পেশাদার চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়ালও।





যদিও মন্ত্রীর দাবি, তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। বক্তব্যের মধ্যে একটা লাইন তুলে যেভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে তা ‘ক্ষতিকারক’ বলেও সাফাই দিয়েছেন পীযূষ গয়াল।