ওয়াশিংটন: চন্দ্রযান ২-র ঐতিহাসিক ‘আলতো লাফের’ অপেক্ষায় মার্কিন মহাকাশ বিজ্ঞানী মহল। ঘড়ির কাঁটা ভারতীয় সময় রাত বারোটা পার হওয়ার পর ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদের নামার চূড়ান্ত তোড়জোড় শুরু করবে। সফলভাবে নামতে পারলে রাশিয়া, আমেরিকা ও চিনের পর ভারতই হবে চতুর্থ দেশ যারা চাঁদের সফট ল্যান্ডিং করবে। একইসঙ্গে প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে তারা।


মার্কিন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা মনে করছেন ভারতের এই চন্দ্রযান প্রকল্প চাঁদের ভূতত্ত্ব সম্পর্কে তাঁদের কাছে আরও তথ্য আনবে। ওয়াশিংটনের ভারতীয় দূতাবাস চন্দ্রযানের চাঁদে নামার সরাসরি সম্প্রচারের আয়োজন করেছে, নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানীরা এই ঐতিহাসিক ল্যান্ডিংয়ের প্রতিটি মুহূর্তে চোখ রাখবেন।

মার্কিন সময় শুক্রবার বিকেল ৪টে থেকে ৫টার মধ্যে ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদ ছোঁবে বলে আশা। ৬ চাকার রোভার প্রজ্ঞান যেখানে ঘুরবে সেই দক্ষিণ মেরু চাঁদের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে ওয়েবসাইট স্পেট ডট কম। চন্দ্রযান ২-র এই ল্যান্ডিং সাইট সম্পূর্ণ অচেনা, মন্তব্য করেছেন জন হপকিনস ইউনিভার্সিটির অ্যাপ্লায়েড ফিজিক্স ল্যাবরেটরির বৈজ্ঞানিক ব্রেট ডেনেভি।

চন্দ্রযান ২ ভারত থেকে ১৩টি যন্ত্র নিয়ে যাচ্ছে, ১টি নাসা থেকে। ডেনেভি জানিয়েছেন, চন্দ্রযানের ইমেজিং ইনফ্রারেড স্পেকট্রোমিটার নিয়ে তিনি সব থেকে বেশি উত্তেজিত, চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত আলো ধরা পড়বে এতে। এর ফলে চাঁদে জল খুঁজে পাওয়া ও তার গুণমান যাচাইয়ের ক্ষেত্রে দারুণ সুবিধে হবে কারণ একটি নির্দিষ্ট ওয়েভলেংথে জল আলো শুষে নেয়।

নিউ ইয়র্ক টাইমস মন্তব্য করেছে, ভারতের অন্যান্য মহাকাশ মিশনের তুলনায় চন্দ্রযান ২ কিছুটা খরচসাপেক্ষ। তবে সব মিলিয়ে খরচ পড়েছে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কম, অর্থাৎ ২০১৪-র হলিউড ছবি ইন্টারসেলার-ও এর থেকে দামি। চাঁদের দক্ষিণ মেরু বিজ্ঞানীদের কাছে সম্ভাবনার খনি কারণ সেখানে জল জমাট বেঁধে হওয়া বরফের সন্ধান মিলতে পারে। চাঁদে যদি ভবিষ্যতে কখনও মানুষ বাস করে তবে এই তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চাঁদে জ্বালানি তৈরির জন্যও তা জরুরি। পৃথিবীর শক্তিক্ষেত্রে রীতিমত জরুরি হিলিয়াম ৩ চাঁদে আছে কিনা তাও জানা যাবে।