নয়াদিল্লি: দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১০০ পার করার পর, কোভিড-১৯ নির্ণয় করতে র্যাপিড অ্যান্টিবডি ব্লাড টেস্ট করার পক্ষে জোরালো সওয়াল করল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) ও কেন্দ্র। সম্প্রতি, এই মর্মে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকে চিঠি লিখে পরামর্শ দিয়েছে আইসিএমআর। সেখানে বলা হয়েছে, খুব শীঘ্রই কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাপিড টেস্ট কিট সরবরাহ করা হবে।
আইসিএমআর-এর মতে, র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্টিং প্রাথমিকভাবে শুরু হবে কন্টেইনমেন্ট জোন -- যেমন বড় উদ্বাস্তু ও শরণার্থী শিবিরে। এখনও পর্যন্ত ভারত কেবল আরটি-পিসিআর (নাক বা গলা থেকে রস) সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু, এই পরীক্ষাগুলির খরচ বেশি এবং সময়সাপেক্ষও বটে। অন্যদিকে, র্যাপিড অ্যান্টিবডি পরীক্ষা দ্রুত হয় এবং একইসঙ্গে তা সহজ ও কম খরচের।
কিন্তু, কী এই র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট? কী করে করা হয় এই পরীক্ষা? কী করেই বা এই পরীক্ষার মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও মোকাবিলা করা সম্ভব হবে ? ভাইরোলজিস্ট চিকিৎসক শাহিদ জামিল গোটা বিষয়টা ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন,
তিনি জানান, র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্টের মাধ্যমে রক্তের নমুনায় আইজিজি অ্যান্টিবডির মাত্রা পরীক্ষা করে দেখা হয়। আঙুলের ডগায় সুঁচ ফুটিয়েই ওই পরীক্ষা করা সম্ভব। কোনও রোগী যিনি আগে পরীক্ষা করাতে পারেননি, বা কেউ যিনি নিজেই সেরে উঠেছেন-- অ্যান্টিবডি টেস্টের মাধ্যমে তাঁদের চিহ্নিতকরণ সম্ভব। এর মাধ্যমে সরকারের হাতে তথ্য আসবে যে জনসংখ্যার কতজন আদপে সংক্রমিত হয়েছেন বা হয়েছিলেন।
যদিও, তিনি একইসঙ্গে জানিয়ে রাখেন, কোভিড নির্ণয়ের অব্যর্থ মাধ্য়ম হিসেবে গণ্য করা যাবে না র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্টকে। তিনি বলেন,
পাশাপাশি, এই টেস্টের মাধ্যমে সংক্রমণের প্রথম দিকের উপসর্গ ধরা পড়ে না। অর্থাৎ, যাঁদের মধ্যে এখনও উপসর্গ দেখা দেয়নি বা যাঁদের দু-একদিনের জন্য উপসর্গ দেখা দিয়েছিল-- এসব ক্ষেত্রে র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট ততটা নির্ভরযোগ্য নয়। কারণ, এসব ক্ষেত্রে র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্টে কিছুই ধরা পড়বে না।
তিনি বোঝালেন, "র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট মূলত স্ক্রিনিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করার জন্যই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কারণ, জনসংখ্যার কত শতাংশ এই ভাইরাসে আক্রান্ত তার একটা আন্দাজ মিলবে। সেই তথ্য না পেলে কার্যকর জনস্বাস্থ্য পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ, এই ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করাও দুঃসাধ্যের হবে।"
পিসিআর পরীক্ষায় কীভাবে ধরা পড়ে ভাইরাস?
শাহিদ জামিল বলেন,
তবে, এর মধ্যে কিছু শর্ত রয়েছে। প্রথমত, মলের মধ্য দিয়ে খুব বেশি ভাইরাস যায় না। মল সংক্রমণের সূত্র হলেও, বেশিরভাগ ভাইরাস সংক্রমিত হয় লালারস ও থুতুর মাধ্যমে। আবার, এমনও হতে পারে, অনেকের লালারসের পরীক্ষা নেগেটিভ এলেও থুতুর পরীক্ষা পজিটিভ এসেছে।
গত ৪ এপ্রিল প্রকাশিত নির্দেশিকায় আইসিএমআর জানিয়েছে, অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় পজিটিভ এলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে হাসপাতাল বা আইসেলেশনে রাখা হবে। কিন্তু, নেগেটিভ এলে হোম কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে। পরে, পিসিআর পরীক্ষা করা হবে।