কলকাতা: তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার ঘোষণার পরই তোলপাড় রাজনৈতিক মহল। এ দিন শুভেচ্ছাবার্তা জানিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ট্যুইটে লেখেন, 'কৃষকদের হাতে আরও ক্ষমতা আসুক! সমস্ত প্রতিকুলতার বিরুদ্ধে তাঁদের দীর্ঘ লড়াই, দৃঢ় মনোভাব কৃষকদের প্রকৃত পরিচয় তুলে ধরেছে। এটাই গণতন্ত্রে বিরুদ্ধ-মতের ক্ষমতা! আমি প্রত্যেক কৃষককে তাঁদের সাহসের জন্য সেলাম জানাই।'

  






দেশজুড়ে প্রতিবাদের মুখে পড়ে শেষপর্যন্ত ৩টি কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিচ্ছে  কেন্দ্রীয় সরকার।  গুরু নানকের জন্মদিনে আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে এই ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।  এই ঘোষণা করে মোদির আবেদন, কৃষকরা এবার খেতে ফিরে আসুন। 


২০২০-র সেপ্টেম্বরে বিতর্কিত কৃষি আইন সংসদের উভয় কক্ষে পাস করিয়ে নেয় কেন্দ্রীয় সরকার।  তারপরই রাস্তায় নামেন কৃষকরা। এই ইস্যুতে প্রায় প্রতিদিনই কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ শুরু করেন রাহুল গান্ধী। তিনি গত ১৪ জানুয়ারি জানিয়েছিলেন, এই আইন আগামীদিনে প্রত্যাহার করতে বাধ্য হবে কেন্দ্র। ১৯ নভেম্বর ঠিক তাই হল।  দেশের অন্যান্য বিরোধী দলও সরব হয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে। হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও দেশের অন্যান্য রাজ্যের কৃষকদের মিছিল এসে হাজির হয় রাজধানীর দরজায়।


আগামী বছরের শুরুতেই রয়েছে পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন।  তার আগে, বছরের শেষে এসে কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে এই তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।   এ বছরের শুরুতেই অবশ্য সুপ্রিম কোর্ট ওই তিনটি কৃষি আইন কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে।


উল্লেখ্য, মোদি সরকার যে তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে প্রথমটি হল, ফারমার্স প্রোডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স (প্রোমোশন অ্যান্ড ফেসিলিটেশন) অ্যাক্ট, ২০২০। যেখানে বলা হয়েছে, বড় ব্যবসায়ী বা বেসরকারি সংস্থা চাইলে সরাসরি চাষির কাছ থেকে কৃষিজ পণ্য কিনতে পারবে।  আইন নিয়ে সরকারের যুক্তি ছিল, এর ফলে কৃষকরা বাজারের সর্বোচ্চ মূল্য পাবেন। কিন্তু কৃষকদের দাবি, এভাবে বাজারের নিয়ন্ত্রণ ব্যবসায়িক সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। 


দ্বিতীয় আইনটি হল ফারমার্স (এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রটেকশন) এগ্রিমেন্ট অব প্রাইস অ্যাসিওরান্স অ্যান্ড ফার্ম সার্ভিসেস অ্যাক্ট, ২০২০। তৃতীয় আইনটি হল এসেনশিয়াল কমোডিটিজ (সংশোধিত) বা অত্যাবশ্যক পণ্য আইন।