নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় আইন পরিবর্তনের দাবিতে আপসহীন কৃষকরা। ৮ ডিসেম্বর ভারত বনধের ডাক। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের সঙ্গে চতুর্থ দফা বৈঠকের পরেও রফাসূত্র মেলেনি। আজ পঞ্চম দফার বৈঠক হওয়ার কথা। এরই মাঝে গতকাল কেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের প্রতিবাদে দেশজুড়ে মোদি-বিরোধী বিক্ষোভ দেখানো হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। দেশের সমস্ত রাজ্যের কৃষকদের দিল্লি চলো অভিযানে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এক বিক্ষোভরত কৃষক জানিয়েছেন, ‘আজ কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে পঞ্চম দফার বৈঠকে যদি কোনওরকম সমাধানসূত্র না পাওয়া যায়, তাহলে আমরা সংসদ ঘেরাও করব।’

দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে টিকরি অঞ্চলে এখনও অবস্থান করছেন কৃষকরা। একইসঙ্গে চিল্লা সীমান্তেও (দিল্লি-নয়ডা লিঙ্ক রোড) কৃষকদের অবস্থান বিক্ষোভ চলছে। এই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল করছে না। দিল্লির ট্র্যাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কৃষকদের বিক্ষোভের জন্য উত্তরপ্রদেশ-দিল্লি সীমান্তে গাজিপুর অঞ্চলে ২৪ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দিতে হয়েছে। দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে ঝটিকারা অঞ্চলে রাস্তা দিয়ে শুধু দু-চাকার যান চলাচল করছে।

কৃষক নেতা রাকেশ টিকাত বলেছেন, ‘সরকারের ডাকা বৈঠকে আমরা যোগ দেব। তবে একইসঙ্গে কৃষি আইনের প্রতিবাদে ৮ ডিসেম্বর ভারত বনধও হবে।’

হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিংহ হুডা কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে বলেছেন, ‘কৃষকদের অপমান করা হচ্ছে। তাঁদের খলিস্তানি, কংগ্রেসি বলে অভিহিত করা হচ্ছে। কিন্তু কৃষকদের একমাত্র পরিচয় তাঁরা কৃষক। তাঁরা ধর্ম, জাত, অঞ্চল নির্বিশেষে ন্যায্য দাবিতে এখানে এসেছেন। এই শীতেও তাঁরা এখানে অবস্থান করছেন।’

তরাই কিষাণ সংস্থানের সভাপতি তেজিন্দর সিংহ ভির্ক বলেছেন, ‘সরকার যদি আজকের বৈঠকে আমাদের দাবি না মেনে নেয়, তাহলে আমরা নয়াদিল্লিতে দুধ, সবজি, ফল সরবরাহ বন্ধ করে দেব। পথ অবরোধ আমাদের আন্দোলনের প্রথম ধাপ ছিল। আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনায় বসব।’

ভারত কিষাণ ইউনিয়নের মুখপাত্র রাকেশ টিকাইত বলেছেন, ‘কৃষকদের দাবি, সরকারকে আইন প্রত্যাহার করতে হবে এবং নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে। বর্তমান আইন শিল্পপতিদের সাহায্য করবে। কৃষি আইন কৃষকদের কথা ভেবে করা উচিত। এই আইনের বিষয়ে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। সরকার যদি আমাদের দাবি মেনে নেয় ভাল, না হলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আরও অনেক কৃষক এই আন্দোলনে যোগ দিতে তৈরি।’

রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের দাবি, কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে এবং কৃষকদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে কেন্দ্রকে। কংগ্রেসশাসিত চার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেয়ে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।