নয়াদিল্লি: কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনের জোর বাড়াতে অনশন শুরু করলেন কৃষকরা। আজ দিল্লির বিভিন্ন সীমানায় ইতিমধ্যে বসে থাকা হাজারো কৃষকদের পাশাপাশি গোটা দেশজুড়ে বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা দিনব্যাপী অনশনে অংশ নিচ্ছেন আন্দোলনকারীদের দাবি।


আজ সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত চলবে কৃষকদের দেশজোড়া অনশন কর্মসূচি। অনশনের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্নাতেও বসবেন কৃষকরা। রাজধানীর সীমানায় কৃষকরা বসে থাকায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে দিল্লি-জয়পুর হাইওয়ের একাংশ। রাজস্থান, হরিয়ানা থেকে আরও বিপুল সংখ্যায় কৃষকরা দিল্লি সীমানার বিভিন্ন প্রবেশপথে অনশন ও ধর্নায় যোগ দিতে এসে পৌঁছেছেন গত রাতেই।

কেন্দ্রের পাশ করা নতুন তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন কৃষকরা। কেন্দ্রের সঙ্গে ইতিমধ্যে বেশ কয়েক দফায় তাদের বৈঠক হয়ে গেলেও বেরিয়ে আসেনি কোনও সমাধানসূত্র। কেন্দ্রও যেমন আইন প্রত্যাহারে নারাজ, তেমনই কৃষকরাও অনড় আইন প্রত্যাহারের দাবিতে।

এদিকে, উত্তরাখণ্ডের এক কৃষক সংগঠন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমারের সঙ্গে দেখা করার ফলে তাদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে বাকিরা। এর মাঝেই আবার কৃষকদের পাশে থাকতে আজ অনশন করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আপের সদস্যদেরও তিনি অনশনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। যা নিয়ে কৃষিমন্ত্রী কৃষকদের আন্দোলনে বিরোধীদের ইন্ধনের অভিযোগও তুলেছেন।

আগেও সেই দাবি করা হয়েছিল কেন্দ্রের পক্ষ থেকে। এমনকি, কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল কৃষকদের আন্দোলনে মাওবাদী যোগের আশঙ্কা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন।

প্রথমে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হচ্ছে দেখে দেশব্যাপী বনধ পালন করেন কৃষকরা। দিনকয়েক আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর বক্তব্যে কৃষি আইন আখেরে কৃষকদের পক্ষে বলে ফের সওয়াল করার পরই আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় কৃষক সংগঠনগুলি। মাঝে বৈঠকে বসে খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কৃষকদের স্বার্থেই আইন বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

গত সেপ্টেম্বরে বিরোধীদের প্রবল বিরোধীতা উড়িয়ে তিন কৃষি বিল পাশ করায় কেন্দ্র। পরে রাষ্ট্রপতির সইতে তা আইন হয়। নতুন আইনের জেরে কৃষকদের সামনে তাদের ফসল বিক্রির ক্ষেত্র আরও বেড়ে যাবে বলে দাবি কেন্দ্রের। যদিও বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের বক্তব্য এই আইন আখেরে কর্পোরেট হাউসগুলির উপর প্রবলভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়তে হবে তাদের। ইতিমধ্যে আইন প্রত্যাহার করার দাবিতে কৃষক সংগঠনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হয়েছে পিটিশনও।