নয়াদিল্লি: বিদেশে তো বটেই, ভারতেও এসে পড়েছে করোনাভাইরাস। এমনকী কলকাতাও বাদ পড়েনি এর থাবা থেকে। আজ থেকে বিকেল চারটেয় ছুটি হয়ে যাবে সব রাজ্য সরকারি অফিস, অনেক বেসরকারি অফিস দিচ্ছে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের সুবিধে। কিন্তু মারাত্মক ছোঁয়াচে এই ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে শুধু নিজের চার দেওয়ালের মধ্যে থাকাই যথেষ্ট নয়, আরও কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে আপনাকে। কী কী করা উচিত এই পরিস্থিতিতে? দেখে নিন।

করোনার লক্ষণ জানেন নিশ্চয়ই। জ্বর আসবে, কাশি হবে, শ্বাসকষ্ট শুরু হবে। হতে পারে গায়ে ব্যথা, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, সর্দি, গলা ব্যথা। কিন্তু এই সব লক্ষণ নেই মানে কিন্তু এমন নয় যে আপনার শরীরে করোনার জীবাণু নেই। দেখা যাচ্ছে, অনেকেরই করোনা হয়েছে কিন্তু এমন কোনও লক্ষণ প্রকাশ পায়নি। অতএব

  • ঘরে থাকুন, বিশেষ করে যদি অসুস্থ হন। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া বার হওয়ার দরকার নেই।

  • যদি বাইরে থাকেন অন্যদের থেকে অন্তত ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন। ১০ জন বা তার বেশি লোক থাকলে সেখানে যাবেন না।

  • হাঁচলে কাশলে মুখ ঢাকা দিন। হয় কনুই ব্যবহার করুন, নয়তো টিস্যু।

  • অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান আর জল দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন। যদি স্যানিটাইজার ব্যবহার করেন, দেখে নিন, তাতে যেন অন্তত ৬০ শতাংশ অ্যালকোহল থাকে।

  • বাড়িতে যে সব জায়গা নিয়মিত স্পর্শ করেন, সেগুলো পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখুন।


আতঙ্ক ছড়ানোর দরকার নেই কিন্তু সঙ্কট এলে কমপক্ষে যেটা দরকার তা হল খাবার, জল আর ঠিকমতো একটা শোয়ার জায়গা। অতএব

  • ৩ সপ্তাহের মত খাবার সংগ্রহ করুন। চাল, ডাল, তরিতরকারি, ডিম কিনে রাখুন কিছু কিছু করে। দেখে নিন, রান্নার গ্যাস যথেষ্ট আছে কিনা।

  • দরকারে কিনে রাখুন যথেষ্ট পরিমাণ জল।

  • হাতের কাছে রাখুন ফার্স্ট এইড কিট।

  • হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে কী করবেন? ফোনে সেফ করুন মেডিক্যাল এমার্জেন্সি নাম্বার। চিকিৎসকের নাম, কাছেপিঠের হাসপাতালগুলোর নাম, ফোন নম্বর থাকবে তাতে। যে ক্লিনিকগুলোতে আপনার মেডিক্যাল ইনসিওরেন্স আছে, সেগুলোরও তালিকা রাখুন, আপনি যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাহলে এই তালিকা হাতের কাছে থাকলে বাড়ির লোকের সুবিধে হবে।

  • বাড়িতে বাচ্চা আছে? কিনে রাখুন যখেষ্ট ডায়াপার, বেবি ফুড এই সব।

  • আর হ্যাঁ, টুথপেস্ট, শ্যাম্পু, সাবান এই সব রেখে দেওয়ার কথা ভুলবেন না।

  • সম্ভব হলে হ্যান্ড স্যানিটাইজারও কিনে রাখুন। বা তৈরি করে নিন নিজস্ব স্যানিটাইজার।


তবে হ্যাঁ, একবারে কিন্তু কয়েক সপ্তাহের বেশি জিনিস জমা করবেন না। ভয়ের চোটে একবারে প্রচুর জিনিসপত্র কিনে জমা করে রাখলে অন্যদের এইসব জিনিস পেতে সমস্যা হতে পারে। আর হয়তো দেখা যাবে, শেষমেষ আপনারও এতটা লাগল না।

  • করোনা থেকে বাঁচতে ফেস মাস্ক কিছুটা সাহায্য করে ঠিকই। কিন্তু গোছা গোছা মাস্ক কেনার থেকে হাত সাবান দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করা ভাল। মাস্কের আকাল ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে, তাও যদি আপনি কিনে জমিয়ে রাখতে শুরু করেন, তাহলে প্রকৃত অসুস্থ ব্যক্তি আর চিকিৎসকরা তা পাবেন না। তাই চিকিৎসক না পরামর্শ দেওয়া পর্যিন্ত নাই বা কিনলেন মাস্ক।


ঘরে থাকতে হচ্ছে বলে অকারণে ভয়ে ভয়ে থাকবেন না। টিভি দেখুন, বাচ্চার সঙ্গে খেলাধুলো করুন। মাথা ঠাণ্ডা রাখতে কিছুক্ষণের জন্য ধ্যান, যোগাভ্যাস করে দেখুন না। চাপ কমাতে মোবাইল ঘাঁটার পরামর্শ শুনতে অস্বাভাবিক লাগে ঠিকই কিন্তু মাঝে মাঝে তাতেও উপকার হয় বৈকি! আর বই পড়ুন প্রাণভরে।

যদি এ সময়ে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকে, নির্দ্বিধায় বাতিল করুন। বা পিছিয়ে দিন। বিশেষ করে যে সব জায়গায় করোনা ছড়িয়ে পড়েছে তা এড়িয়ে চলুন।

সময় কাটাতে তাস, দাবা, লুডো, ক্যারাম খেলুন, টিভি দেখুন। বাচ্চাকে শিখিয়ে দিন দাবা, দেখবেন, ভাল সঙ্গী পাবেন।