নয়াদিল্লি: গাঁধী পরিবারের এসপিজি সুরক্ষা প্রত্যাহার। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার এবার সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার নিরাপত্তায় আর এসপিজি বাহিনী মোতায়েন না রাখার সিদ্ধান্ত নিল। তিনজনই এতদিন এসপিজি নিরাপত্তা পেতেন। এবার থেকে তাঁরা এসপিজি নিরাপত্তা বলয়ের পরিবর্তে জে প্লাস স্তরের নিরাপত্তা পাবেন বলে খবর।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অফিসাররা জানিয়েছেন, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী, প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গাঁধী ও দলের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা সিআরপিএফের জেড প্লাস সুরক্ষা পাবেন। তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টি মূল্যায়নের পরই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


রাহুল অবশ্য ট্যুইট করে ‘বছরের পর বছর এসপিজি-র যে ভাইবোনেরা আমাকে, আমার পরিবারকে সুরক্ষিত রেখেছেন, তাঁদের সবাইকে বিরাট ধন্যবাদ’ দিয়েছেন। লিখেছেন, আপনাদের দায়বদ্ধতা, ধারাবাহিক সমর্থন ও স্নেহ ও শিক্ষায় পরিপূর্ণ সফরের জন্য ধন্যবাদ। এ এক বিরাট প্রাপ্তি। সকলের ভবিষ্যত্ শুভ হোক, শুভেচ্ছা জানাই।


চলতি বছরে এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সুরক্ষা ব্যবস্থাও হ্রাস করে এসপিজি কভার থেকে জেড প্লাস ক্যাটাগরি করার সিদ্ধান্ত নেয়।
যদিও আরেক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অটলবিহারী বাজপেয়ী ২০১৮-য় মৃত্যু পর্যন্ত এসপিজি সুরক্ষার আওতায়ই ছিলেন।
ফলে এবার এসপিজি সুরক্ষা বলয় থাকবে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য।
কংগ্রেস এর তীব্র নিন্দা করে বলেছে, বিজেপি-এনডিএ সরকার ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা মেটাচ্ছে। কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল ট্যুইট করেছেন, বিজেপি চূড়ান্ত ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটানোর রাস্তায় নেমেছে, দুজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের জীবন সন্ত্রাস, হিংসার মুখে ঠেলে দিয়ে, তাঁদের ঝুঁকির মুখে ফেলে।
আরেক কংগ্রেস মুখপাত্র কে সি বেনুগোপাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ব্যক্তিগত আক্রোশ, প্রতিহিংসায় অন্ধ হয়ে গিয়েছেন। কংগ্রেস সমর্থকরা বিকালে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কৃষ্ণ মেনন মার্গের বাসভবনের বাইরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান।

প্রসঙ্গত, ১৯৯১–এ রাজীব গাঁধীর হত্যাকাণ্ডের পর এসপিজি আইন সংশোধন করে নিয়ম করা হয়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীরা মেয়াদ শেষের দিন থেকে শুরু করে ১০ বছর সরকারি খরচে সুরক্ষা পাবেন, তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও এই নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় থাকবেন।
অতীতেও এসপিজি সুরক্ষা নিয়ে বিতর্কে হয়েছিল। ১৯৮৪ সালে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী হত্যাকাণ্ডের পর বর্তমান ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে তৈরি হয় এসপিজি। ১৯৮৯ সালে বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর সরকার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর এসপিজি নিরাপত্তা প্রত্যাহার করেছিল।