শ্রীনগর: দীর্ঘ সাত মাস বাদে ডঃ ফারুক আবদুল্লাকে আটক রাখার নির্দেশ প্রত্যাহার করল জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন। গত বছর আগস্টে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ফারুক সহ কাশ্মীরের একাধিক শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীকে গৃহবন্দি করা হয়। আজ স্থানীয় প্রশাসনের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীর জনসুরক্ষা আইন, ১৯৭৮ এর ১৯ (১) অনুচ্ছেদে অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগ করে সরকার শ্রীনগরের জেলাশাসকের দেওয়া No. DMS/PSA/120/2019 আটক রাখার নির্দেশটি প্রত্যাহার করছে।
ফারুক শ্রীনগরের গুপকার রোডের বাসভবনে বন্দি রয়েছেন। তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) দলের সভাপতি। জম্মু ও কাশ্মীরের আলাদা রাজ্যের মর্যাদা বাতিলের আগের দিন, গত ৫ আগস্ট ফারুকের পাশাপাশি আটক করে গৃহবন্দি করা হয় তাঁর ছেলে তথা আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ও পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি) নেত্রী মেহবুবা মুফতিকেও। মেহবুবাও ছিলেন বিজেপি-পিডিপি জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী।
এ সপ্তাহের গোড়ায় দেশের বিরোধী শিবিরের কয়েকজন নেতা এই তিনজনেরই মুক্তি চেয়ে সরব হন। তাঁরা বিবৃতি দিয়ে বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বাকি সব আটক রাজনৈতিক লোকজনের এখনই মুক্তি দাবি করা আমাদের অবশ্য করণীয় কর্তব্য। বিবৃতিটি ট্যুইট করেছেন এনসিপি সভাপতি শরদ পওয়ার। বিবৃতিতে মোদি সরকার ‘দমনপীড়নমূলক প্রশাসনিক পদক্ষেপে’র মাধ্যমে গণতান্ত্রিক বিরুদ্ধতার ‘কন্ঠরোধ করছে’ বলে অভিযোগ করেন বিরোধী নেতারা।
এনসি-ও সম্প্রতি বলেছে, ফারুককে আটকে রেখে দেওয়ার মধ্য দিয়ে কেন্দ্র যে কাশ্মীরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব পছন্দ করে না, সেটাই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। দলের শীর্ষ নেতা ও উত্তর কাশ্মীরের সাংসদ মহম্মদ আকবর লোন বলেন, গত দুটি দশকে যেসব সাফল্য, ফসল এসেছিল, কাশ্মীরে মূলস্রোতের রাজনীতিকে নাকচ করে সেসব জলাঞ্জলি দিয়ে এক বিপজ্জনক শূন্যতা তৈরি করেছে কেন্দ্রের সরকার। একজন সাংসদকে, যাঁকে প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ি কাশ্মীরের ‘তৃতীয় পক্ষ’ বলে উল্লেখ করেছিলেন, আটকে রাখাটা ‘অসম্মানজনক’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।