কলকাতা: বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণের ভাষা নিয়ে সরব রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। ‘মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চেয়ে এই মন্তব্য প্রত্যাহার করুন। এই ধরনের মন্তব্য বাংলার সংস্কৃতির পরিপন্থী,’ ট্যুইট রাজ্যপালের।


আজ ডায়মন্ড হারবার যাওয়ার পথে নাড্ডার কনভয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে। আমতলা থেকে শিরাকোল পর্যন্ত রাস্তায় দফায় দফায় বাধার মুখে পড়ে কনভয়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। পাথর ছোড়া হয় কৈলাস বিজয়বর্গীয়র গাড়িতে। উড়ন্ত বোতলের ঘায়ে দিলীপ ঘোষের গাড়ির কাচ ভেঙে আহত এক নিরাপত্তাকর্মী। ইটের ঘায়ে এবিপি আনন্দর প্রতিনিধির গাড়ির কাচও ভাঙে। তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে যাওয়ার পথে আজ সকালে শিরাকোলে তৃণমূলের অবরোধে আটকে পড়ে নাড্ডার কনভয়। কনভয়ের বেশ কয়েকটি গাড়িতে হামলা হয় বলে অভিযোগ বিজেপির। কয়েকটি গাড়ির কাচ ভাঙে। সরিষার কাছে ভাঙচুর চলে যাত্রীবাসেও। বিজেপি নেতা রাকেশ সিংহের অনুগামীদের মোটরবাইক বাহিনী অবরোধের মধ্যে পড়ে। অভিযোগ, রাকেশ সিংহের দলবলের উপর হামলা হয়।

ডায়মন্ড হারবারে পৌঁছে নাড্ডা বলেন, ‘তৃণমূলের গুন্ডারা আমাকে আটকানোর চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখেনি। মা দুর্গার দয়ায় এখানে এসে পৌঁছতে পেরেছি।’

নাড্ডার কর্মসূচিতে কি তৃণমূল হামলা চালিয়েছে? না কি পুরোটাই বিজেপির পরিকল্পিত চিত্রনাট্য? ঘাসফুল ও গেরুয়া শিবিরের পরষ্পর বিরোধী দাবি ঘিরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি।

মমতা বলেন, ‘নাড্ডা, ফাড্ডা, চাড্ডা প্রতিদিন আসছে। মুখ্যমন্ত্রী আসছে, হোম মিনিস্টার আসছে। নিজেরা ন্যাশনাল টিভিতে পাবলিসিটি পেতে এসব করছে। ১ জনের সঙ্গে কেন ৫০টা গাড়ি যাবে। কী করে ভিডিও তুললেন? একটা টেল কারের পিছনে ঢিল মেরেছে। তোমরা প্ল্যান করে করেছ। যেভাবে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি প্ল্যান করে ভেঙেছিলে। আমি পুলিশকে বলেছি তদন্ত করতে।’

বিজেপি-কে আক্রমণ করে মমতা আরও বলেন, ‘বিজেপি বাংলার রাজনৈতিক দল নয়। বিজেপি দিল্লি এবং গুজরাতের দল। গ্রামে বাইরের কাউকে দেখলেই থানায় জানান। বিজেপি বলছে বাংলায় আইনশৃঙ্খলা নেই। কলকাতা সবথেকে সুরক্ষিত শহর। রবীন্দ্রনাথের জন্ম নিয়েও মিথ্যে বলছেন বিজেপি নেতারা। বিরসা মুণ্ডা নিয়েও মিথ্যাচার করেছে বিজেপি। বিদ্বজ্জনরা প্রতিবাদ করুন, প্রতিরোধ করুন। বাংলায় সব উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। কোথাও কোনও অশান্তি হয়নি, শুধু মিথ্যে বলছে বিজেপি। ভাষণ দিতে দিতে বিজেপি দলটাই হারিয়ে যাবে। কাল হেস্টিংসে নিজের দলের লোক নিয়েই নাটক করেছেন। যারা বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে তারাই ছিল হেস্টিংসে। গোটা বিজেপি দল, কেন্দ্র সরকার একদিকে, আমি একা একদিকে। দেখিয়ে দেব কার কত জোর। এত নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও ঢিল মারে কী করে? রাজ্য সরকার সকলকে নিরাপত্তা দেয়। আমি দিল্লি গেলে তোমরা কী করো? আমি দিল্লি গেলে বিজেপি গাড়ির সামনে ঝামেলা করে।’

ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘নাড্ডার কনভয়ে হামলা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।’

এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের ট্যুইট ফের বিতর্ক উস্কে দিল।