আহমেদাবাদ:  হোটেলের প্যাসেজে দাঁড়িয়ে একপাল কুকুর-বিড়াল। একটা ছাগলও। দেখেশুনে চক্ষু চড়কগাছ ম্যানেজারের। হোটেলের অন্যান্য আবাসিকদেরও ভ্রু কুঁচকে যায়। আহমেদাবাদের শাহ-ই-আলম এলাকায় হোটেলের ম্যানেজার রমেশ পাঞ্চাল তলব করেন দারোয়ানকে। জানতে পারেন ওই পশুগুলি এক মার্কিন পর্যটকের। খাতা হাতড়ে ম্যানেজার দেখলেন, আগে থেকেই ওই মহিলা মার্কিন নাগরিকের জন্য ঘর বুক করা ছিল। কিন্তু তিনি যে এত পোষ্য নিয়ে ঢুকে যাবেন, তা কে জানত!
ম্যানেজার তখন ওই মার্কিন পর্যটককে হোটেল ছাড়তে বলেন। কিন্তু বেঁকে বসেন ওই পর্যটক। হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে খানিক তর্কাতর্কির পর পুলিশে খবর দেন তিনি।

এই ঘটনা গত ১০ এপ্রিলের। কাগাদাপীঠ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। থানার ইন্সপেক্টর এসএস মোদি বলেছেন, ওই মার্কিন নাগরিক ১৪ টি পোষ্য নিয়ে হোটেলে ঢুকে পড়ায় মালিক বেজায় বেকায়দায় পড়েছেন। ওই মার্কিন পর্যটককে হোটেল ছাড়তে বলা হলে তিনি আমাদের ডাকেন। কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তাই দুই পক্ষকে শান্ত করা ছাড়া আমরা অন্য কিছু করতে পারিনি।




ম্যানেজার বলেছেন, দুই ব্যক্তি এসে এক মার্কিন নাগরিকের জন্য ঘর বুক করেছিলেন। আমাদের জানা ছিল না যে, এতগুলি পশু নিয়ে আসবেন।

৯ এপ্রিল রাতে ওই মার্কিন পর্যটক সাতটি বিড়াল, ছয়টি কুকুর ও একটি ছাগল  নিয়ে হোটেলে আসেন। তখন শুধুমাত্র একজন দারোয়ান ছিলেন। পশুগুলিকে হোটেলের প্যাসেজে রাখা হয়।

পরদিন সকালে হোটেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে হোটেল ছেড়ে দিতে বলায় ওই মার্কিন পর্যটক রেগে গিয়ে পুলিশ ডাকেন। ম্যানেজার বলেন, তারপর থেকে আমরা তাঁকে আর কিছু বলিনি।

ওই মার্কিন মহিলা বলেছেন, ২০১৫-র জানুয়ারিতে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী থেকে ছয়টির মধ্যে একটি কুকুরকে উদ্ধার করেন তিনি। আর ছাগলটিকেও ওই বছরেরই মার্চে উদ্ধার করেন।এখন এই পোষ্যগুলির প্রতিপালনের জন্য উপযুক্ত পরিবারের খোঁজ চালাচ্ছেন তিনি। একজন তাঁকে সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর দেরি হচ্ছে। ওই মহিলা বলেছেন, এরমধ্যে কিনা হোটেল কর্তৃপক্ষ আমাকে ঘর ছাড়ার কথা বলছেন!আমি আমার পোষ্যদের এখানে ছেড়ে যেতে পারি না। আমি হোটেল ছাড়ব, কিন্তু আমি সাহায্যের অপেক্ষা করছি। সমস্যার সমাধানের একটা উপায় খুঁজছি।

পরে অবশ্য শুক্রবার হোটেল ছেড়ে চলে যান ওই মহিলা। ভাগ্য ভাল বলতে হবে। শুক্রবার বিকেলে তিনি সমস্ত পোষ্যদের নিয়ে হোটেল ছেড়েছেন। আমাদের বলেছেন যে, তিনি কেরলে যাচ্ছেন,স্বস্তির শ্বাস ফেলে  জানিয়েছেন হোটেলের ম্যানেজার।