বেঙ্গালুরু: আর মাঝে মাত্র একদিন। তারপরই চাঁদের মাটিতে পা রাখতে চলেছে ভারত। ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলেছে গোটা দেশ। অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় বিশ্ববাসী। সাফল্য-কামনায় প্রার্থনা করছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
শনিবার গভীর রাতে চাঁদে অবতরণ করবে চন্দ্রযান ২। বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে বলা হচ্ছে ‘সফট ল্যান্ডিং’। এই প্রথম ভারতীয় কোনও মহাকাশযান চাঁদের মাটি ছোঁবে। সব ঠিকঠাক চললে, বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে এই কীর্তি স্থাপন করবে ভারত। এই পরিস্থিতিতে, বেঙ্গালুরুতে চাপা উৎকণ্ঠায় চোখের পাতা এক করতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা। একসঙ্গে উত্তেজিত ও সতর্কও। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, হিসেব-নিকেশ।
ইসরোর এক শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী এদিন বললেন, সকলেই মুখে কুলুপ এঁটেছে। আমিও তাই। যতক্ষণ না সবকিছু ঠিকঠাক সম্পন্ন হচ্ছে, ততক্ষণ কোনও মন্তব্য নয়। তিনি জানান, এখন সকলের চোখ চন্দ্রযান ২-এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ ও রোভার ‘প্রজ্ঞান’-এর দিকে।
ইসরোর প্রধান তথা চেয়ারম্যান কে শিবন সম্প্রতি জানিয়েছেন, অভিযানের সাফল্যের জন্য আমাদের তরফে ও ক্ষমতায় যা যা করা সম্ভব, সবকিছুই করা হয়েছে। এখন একটাই প্রার্থনা-- যাতে ‘সফট ল্যান্ডিং’ সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়। ইসরোর প্রাক্তন প্রধান জি মাধবন নায়ার মনে করেন, তিনি আশাবাদী, দারুন একটা জিনিস ঘটতে চলেছে। আমরা সকলে আশাবাদী মন নিয়ে সেই দিকে তাকিয়ে রয়েছি। এতক্ষণ পর্যন্ত অভিযান ১০০ শতাংশ সফল। আশা করি, বাকিটাও তেমনই হবে।
সংস্থার আরেক প্রাক্তন প্রধান এ এস কিরণ কুমার মনে করেন, এই ‘সফট ল্যান্ডিং’ হল গোটা মিশনের সবচেয়ে জটিল অধ্যায়। কারণ, এর ওপরই গোটা অভিযানের ভাগ্য নির্ধারণ করছে।
২২ জুলাই অর্বিটার, ল্যান্ডার ও রোভারকে নিয়ে মহাকাশে পাড়ি দেয় প্রায় ৯৭৮ কোটি টাকার চন্দ্রযান ২। উৎক্ষেপণের ২৩ দিনের মাথায় ১৪ অগাস্ট তা পৃথিবীর কক্ষপথ ত্যাগ করে চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করে। এরপর, ২ সেপ্টেম্বর অর্বিটারের থেকে সফলভাবে বিচ্ছিন্ন হয় ল্যান্ডার। পরের দুদিন দুবার ম্যানুভারিং করে কক্ষপথের পরিধি কমিয়ে এখন অবতরনের চূড়ান্ত পর্যায়ের জন্য প্রস্তুত ল্যান্ডারটি।
ইসরোর সূত্রে খবর, শনিবার রাত ১টা ও ২টোর মধ্যে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে ‘বিক্রম’। পরে, দেড়টা থেকে আড়াইটার মধ্যে ল্যান্ডারের থেকে রোভারের বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। মাহেন্দ্রক্ষণের আর মাত্র ৩০-ঘণ্টা বাকি। সাফল্য কামনায় প্রহর গুণছে তামাম ভারতবাসী।