নয়াদিল্লি: অযোধ্যা ইস্যু তাদের অগ্রাধিকার নয়, এই কারণ দেখিয়ে এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্ট শুনানি স্থগিত রাখায় ক্ষুব্ধ আরএসএস। মহারাষ্ট্রের ঠানে জেলায় আরএসএসের তিনদিনের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ভাইয়াজি জোশী বলেছেন, হিন্দু ভাবাবেগকে অপমান করা হয়েছে এতে। আরএসএস আশা করেছিল, হিন্দু সম্প্রদায়ের আবেগ-অনুভূতি বিবেচনা করে রামজন্মভূমি ইস্যুর সমাধান করবে সুপ্রিম কোর্ট। দীর্ঘদিনের বকেয়া বিষয়টির ওপর রায়ের জন্য সুদীর্ঘ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। মন্দির তৈরির পথ সুগম করতে আইনি সম্মতি প্রয়োজন। আদালতের রায়ের জন্য প্রতীক্ষাটা খুব বেশি হয়ে গেল। ২৯ অক্টোবর শুনানির জন্য ইস্যুটি তালিকাভুক্ত ছিল বলে আমরা ভেবেছিলাম দেওয়ালির আগে হিন্দুরা একটা সুখবর পাবেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট শুনানি চালাতে রাজি হয়নি, স্থগিত রেখেছে। কবে রায় বেরবে, জানতে চাওয়া হলে বলেছে, তাদের অগ্রাধিকার আলাদা। হিন্দুরা যেটাকে নিজেদের বিশ্বাস বলে মনে করেন, যার সঙ্গে তাঁদের ভাবাবেগ জড়িত, তা সুপ্রিম কোর্টের অগ্রাধিকারের তালিকায় না থাকাটা যন্ত্রণা, কষ্টের, হিন্দুরা এতে অপমানিত বোধ করছেন।


প্রয়োজনে এ নিয়ে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। তবে বলেছেন, যেহেতু বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন, তাই বিধিনিষেধ রয়েছে। কিন্তু আর কোনও উপায় না থাকলে মন্দিরের জন্য অর্ডিন্যান্স জারি করতে হবে। আরএসএস সরকারের ওপর চাপসৃষ্টি করছে না, কারণ আমরা আইন, সংবিধানকে সম্মান করি, আর সেজন্যই দেরি হচ্ছে। আমরা ঐকমত্য চাইছি। আমরা সুপ্রিম কোর্টকেও শ্রদ্ধা করি, হিন্দুদের আবেগের বিষয়টি মাথায় রাখার আবেদন করছি তাদের।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ অক্টোবর সর্বোচ্চ আদালত রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্ক মামলার শুনানি স্থগিত রেখে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ধার্য করে জানায়, একটি যথাযথ বেঞ্চে শুনানি হবে। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলে, আমাদের কিছু অগ্রাধিকার আছে। জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি বা মার্চে, কবে শুনানি হবে, তা সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ ঠিক করবে।
কিন্তু শীর্ষ সঙ্ঘ নেতার বক্তব্য, মন্দিরের মতো এমন সংবেদনশীল ইস্যুকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, এ নিয়ে রায়দানে বিলম্ব হওয়া ভাল নয়। আমরা যেমন শীর্ষ আদালতকে সম্মান করি, তেমনই তাদেরও হিন্দু ভাবাবেগকে শ্রদ্ধা করা উচিত।
অর্ডিন্যান্সের দাবি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে যাঁরা তা চাইছেন, এটা তাঁদের অধিকার বলেও মন্তব্য করেন জোশী। বলেন, সব রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে সরকার এই পথটাও খতিয়ে দেখুক। যদিও এটা তাদের ওপরই নির্ভর করছে। একইসঙ্গে বলেন, মালিকানা মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট না নিলে সরকারের পক্ষেও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে ওঠে।
এদিন সম্মেলনের ফাঁকে সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের দেখা হলে দুজনের আলোচনাতেও মন্দির প্রসঙ্গ ওঠে বলে জানান জোশী।