নয়াদিল্লি: প্রয়াত প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরিয়ে এনেছিলেন তাঁকে। তারপর পেরিয়ে গিয়েছে পাঁচটি বছর। কিন্তু ভারতে ফিরতে পারলেও, নিজের পরিজনেদের কাছে ফেরা হয়নি গীতার। কারণ নিজের মা-বাবাকে খুঁজেই পাননি তিনি। ফলে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে দিন কাটছে মূক ও বধির ওই যুবতীর।


আজ থেকে কুড়ি বছর আগের কথা। পাকিস্তানের লাহৌর স্টেশনে সমঝোতা এক্সপ্রেসে বসেছিল বছর আটেকের গীতা। পাকিস্তানি রেঞ্জার্সরা তাঁকে উদ্ধার করেন। ইদহি ফাউন্ডেশন নামে একটি স্বেচ্ছাসেবা সংস্থার এক কর্তা গীতাকে দত্তক নেন। তারপর থেকে তিনি পাকিস্তানেই ছিলেন। অবশেষে ২০১৫ সালে তিনি দেশে ফেরার সুযোগ পান। ২০১৫ সালের ২৬ অক্টোবর তিনি ভারতে পা রাখেন। ব্যক্তিগতভাবে সুষমা তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। আশ্বাস দিয়েছিলেন তাঁর পরিবারকে খুঁজে দিতে সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। তারপর পেরিয়ে গেছে অনেকগুলি বছর। কিন্তু আজও মা-বাবাকে খুঁজে পাননি গীতা।

মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে আছেন ‘হিন্দুস্তান কি বেটি’। গীতাকে এভাবেই সম্বোধন করেন সুষমা। তিনি প্রয়াত, গীতারও বয়স বেড়ে গিয়েছে। গত কয়েকবছরে গীতার মা-বাবা বলে নিজেদের দাবি করে দেখা করতে এসেছেন বহুজন। কিন্তু কাউকেই নিজের মা-বাবা হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেননি গীতা। যে সব দম্পতিরা গীতার মা-বাবা পরিচয় দিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন, তাঁরাও প্রয়োজনীয় প্রমাণ দাখিল করতে পারেননি। ফলে সময় গড়িয়ে গিয়েছে। কিন্তু মা-বাবার খোঁজ এখনও শেষ হয়নি গীতার।

মহারাষ্ট্রের নান্দের এলাকাতেও তাঁর পরিজনেদের খোঁজে গিয়েছিলেন গীতা। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তিনি শুধু জানাতে পেরেছেন, তাঁর মনে পড়ে একটি রেলস্টেশনের কাছে তাঁর বাড়ি ছিল। কাছাকাছি একটি হাসপাতাল ও মন্দির ছিল। বাড়ির কাছে নদী ছিল। কিন্তু এর বেশি কিছু জানাতে পারেননি। তাঁর দেওয়া এই তথ্যের ভিত্তিতে তাঁর বাড়ি ও মা-বাবার খোঁজ চালাচ্ছেন সেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা। এতগুলি বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও আশাবাদী গীতা, ঠিক একদিন তাঁর বাবা-মাকে খুঁজে পাবেন তিনি। ফিরে যাবেন আদরের আশ্রয়ে।

২০১৮ সালে জ্ঞানেন্দ্র পুরোহিত নামে এক সমাজকর্মী গীতার বিয়ের উদ্যোগ নেন। তিনি ফেসবুক পোস্ট করে গীতার জন্য ভাল, বুদ্ধিমান, শ্রবণশক্তিহীন পাত্র চান। অনেকেই গীতাকে বিয়ে করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরপর অবশ্য এ বিষয়ে আর কিছু জানা যায়নি।