নয়াদিল্লি: গত ডিসেম্বরে চিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত সারা বিশ্বে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১ কোটি ৭৩ লক্ষ মানুষ। মারা গিয়েছেন ৬ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ। এই অবস্থায় আগামীদিনে মারণ ভাইরাসটির প্রভাব নিয়ে মারাত্মক এক তথ্য প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। তাদের মতে, আগামী কয়েক দশক ধরে বুঝতে পারা যাবে করোনার প্রভাব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্ণধার টেড্রোস আধানম ঘেব্রেসাস নিজে এ ব্যাপারে সতর্কবার্তা দিয়েছেন।


করোনা সংক্রমণকে আন্তর্জাতিক জরুরি অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করতে দেরি করায় এর আগে অনেক দেশ সমালোচনা করেছে হু-র। আমেরিকা তো এমন অভিযোগও করেছে যে, চিনকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে হু। তাই ট্রাম্প সরকার হু-কে অর্থসাহায্য বন্ধ করে দিয়েছে। তার পাশাপাশি সংক্রমণ ছড়ানো, মাস্ক পরা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে হু-র প্রথম দিকে জারি করা করা সতর্কবার্তার সঙ্গে পরবর্তীকালে প্রচার করা সতর্কবার্তার বিস্তর ফারাক আছে। তা নিয়েও কম সমালোচনা হয়নি গোটা বিশ্বে। তারই মধ্যে করোনার সুদূরপ্রসারী প্রভাব নিয়ে এই নয়া সতর্কবার্তা।

সম্প্রতি এক বৈঠকে বসেছিল হু-র ইমারজেন্সি কমিটি। এই কমিটির আঠারো জন সদস্য ও বারো জন উপদেষ্টা মিলে এই নিয়ে মোট চারবার বৈঠক করলেন। সেখানেই হু প্রধান বলেন, ‘আপনারা ৬ মাস আগে আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে আমি যেন জনস্বাস্থ্যের বিষয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করি। তখন চিনের বাইরে ১০০ জনও আক্রান্ত হননি, কেউ মারাও যাননি। কিন্তু এখন তো এই মহামারী এমন চেহারা নিয়েছে যা এক শতকে একবার আসে। এমন অতিমারী প্রভাব আগামী কয়েক দশক ধরে উপলব্ধি করা যাবে।’

বৈঠকে হু প্রধান আরও বলেন, ‘কোনও দেশ যখনই ভাবছে যে এবার বুঝি সংক্রমণ শেষ হয়ে গিয়েছে, ঠিক তখনই সেখানে দ্বিতীয়বার সংক্রমণ ঘটছে যা প্রথমবারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তাই এখনই নিশ্চিন্ত হওয়ার সময় আসেনি। তাছাড়া বহুদিন ধরে লকডাউন চলতে থাকায় অনেক দেশই অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে। এটা তো আর দিনের পর দিন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই প্রতিষেধক না বেরনো পর্য়ন্ত  করোনার হাত থেকে বাঁচার কোনও উপায় নেই। তবে ভ্যাকসিন বেরোলেও আমাদের বুঝে নিতে হবে, এই ভাইরাসকে সঙ্গে নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে। সেটা আমাদের শিখতে হবে। তাই মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা এগুলিকে জীবনের অঙ্গ করে নিতে হবে।’