নয়াদিল্লি: পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় গুলি চলার ঘটনায় চিনের যাবতীয় অভিযোগকে খারিজ করেছে ভারত। সেনার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভারত কোনও অবস্থাতেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পার করেনি বা গুলি চালায়নি। ভারতের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, বিনা প্ররোচনায় কখনই এধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে না ভারত।


ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়, ফরওয়ার্ড পোস্টের কাছাকাছি চলে আসে চিনা ফৌজ। নিজেদের ফৌজকে ফরওয়ার্ড পোস্টের কাছ থেকে সরাতে তখন শূন্যে গুলি চালায় চিনা সেনা।


একই সঙ্গে ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরোয়নি ভারতীয় সেনা। চিনের দিক থেকে লাগাতার প্ররোচনা সত্ত্বেও ভারত সংযমী মনোভাবই দেখিয়েছে বলে দাবি দিল্লির। গোটা বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে।


প্রসঙ্গত, ৪৫ বছর পর, ভারত-চিন সীমান্তে গুলি চলার ঘটনা ঘটে। এর আগে ১৯৭৫ সালে অরুণাচল প্রদেশে শেষবার ভারত-চিন সীমান্তে গুলি চলেছিল।


এদিনের গুলি চালনার ঘটনায় গোটা দায় ভারতের ওপর চাপানোর চেষ্টা করে চিন। চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রককে উদ্ধৃত করে সেদেশের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের দাবি, ভারত প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। চিনের প্যাট্রলিং দল যখন কথা বলার জন্য এগোচ্ছিল, সেই সময় ভারত ফায়ারিং করে। চিন তখন জবাবি ফায়ারিং করে।


কিন্তু, ভারত সেই অভিযোগ সম্পূর্ণ খারিজ করে দেয়। ভারতীয় সেনা জানিয়েছে, যেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সামরিক, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক স্তরে আলোচনা চলছে, সেই অবস্থায় চিনা সেনাই যাবতীয় চুক্তি অগ্রাহ্য করে আগ্রাসী মনোভাব দেখাচ্ছে।


ভারতীয় সেনার আরও দাবি, চিনা পিএলএ-র তরফে যে বিবৃতি জারি করা হয়েছে, তা স্রেফ আন্তর্জাতিক মহল ও নিজেদের দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য। ভারতীয় সেনা সর্বদা শান্তি, স্থিতাবস্থার জন্য আন্তরিক। একইসঙ্গে, সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষা করতেও বদ্ধপরিকর ভারতীয় ফৌজ।


লাদাখ সীমান্তে ভারত-চিন সংঘাতের সূত্রপাত এ বছরের ১৫ জুন। ওইদিন গালওয়ান উপত্যকায়, ভারতীয় সেনার ১৪ নম্বর পেট্রোলিং পয়েন্টে অতর্কিতে হামলা চালায় চিনা ফৌজ। সংঘর্ষে ভারতীয় সেনার এক কর্নেল-সহ ২০ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়।


তারপর থেকে বারবার সীমান্তে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে চিনা ফৌজ। ২৯ অগস্ট রাতে লাদাখে প্যাংগং লেকের দক্ষিণাংশে ফের অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে তারা। ভারতীয় সেনার তৎপরতায় সেই চেষ্টা বানচাল হয়। দু’ দিন পর ৩১ অগাস্ট চিনা সেনা চুসুল সেক্টরে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢোকার চেষ্টা করে। এবারও ব্যর্থ হয় তারা।