নয়াদিল্লি: অর্থনীতির মন্দা ও করোনার জেরে ভারতের অর্থনীতি একধাপ পিছিয়ে বিশ্বে ষষ্ঠ স্থানে এসে পৌঁছেছে ঠিকই কিন্তু ২০২৫-এর মধ্যে তা আবার পঞ্চম বৃহত্তম হবে, পিছনে ফেলবে ব্রিটেনকে। বলছে ব্রিটেনের সেন্টার ফর ইকোনমিক্স অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (CEBR)-এর রিপোর্ট। ২০৩০-এর মধ্যে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হবে বলেও রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।

CEBR বার্ষিক রিপোর্ট বলছে, করোনার জেরে ভারতীয় অর্থনীতি কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে ঠিকই, ফলে ২০১৯-এ ব্রিটেন আমাদের পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে। ২০২০-তেও টাকার মূল্য কমে যাওয়ায় তারা এগিয়ে রয়েছে। ২০২৪ পর্যন্ত এভাবেই ব্রিটেন আমাদের আগে থাকবে। তারপর আবার টপকে যাবে ভারত। ২০২১-এ ভারতীয় অর্থনীতি ৯ শতাংশ বাড়বে, ২০২২-এ বাড়বে ৭ শতাংশ। তখন থেকে ধীরে ধীরে কমতে থাকবে আর্থিক বৃদ্ধি কারণ দেশ যত আর্থিকভাবে উন্নত হবে, তত স্বাভাবিক নিয়মেই বৃদ্ধি কমতে থাকবে। এভাবে চলতে থাকলে ২০৩৫-এ ভারতের বার্ষিক বৃদ্ধি কমে হতে পারে ৫.৮ শতাংশ।

২০৩০-এর মধ্যে ভারত হয়ে উঠবে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। ২০২৫-এ ব্রিটেনকে টপকে যাওয়ার পর ২০২৭-এ টপকে যাবে জার্মানিকে আর ২০৩০-এ জাপানকে। বলছে CEBR রিপোর্ট।

এই রিপোর্ট আরও বলছে, ২০২৮-এ চিন আমেরিকাকে টপকে হয়ে উঠবে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি। আগে মনে করা হচ্ছিল, ২০৩৩ সাল নাগাদ তারা আমেরিকাকে টপকাবে কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ৫ বছর আগেই তা ঘটবে, কারণ করোনা অতিমারী রোখার ব্যাপারে দুই দেশের সাফল্য সম্পূর্ণ বিপরীত। ডলারের হিসেবে জাপান বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিই থেকে যাবে ২০৩০-এর শুরু পর্যন্ত, তারপর ভারত টপকে যাবে তাদের। জার্মানি তখন চতুর্থ থেকে নেমে হবে পঞ্চম।

CEBR রিপোর্ট বলছে, করোনা পরিস্থিতির জেরে দেশে যে সঙ্কট দেখা দেয়, তার আগে থেকেই ভারতীয় অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিয়েছিল। ২০১৯-এ আর্থিক বৃদ্ধির হার গত ১০ বছরে সব থেকে বেশি নেমে গিয়ে হয় ৪.২ শতাংশ। ২০১৮-তেই এই হার ছিল ৬.১ শতাংশ, ২০১৬-য় ৮.৩ শতাংশ। ভঙ্গুর ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা, সংস্কার করতে গিয়ে বোঝাপড়া ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমে যাওয়া এই মন্দার কারণ। এই পরিস্থিতিতে করোনা অতিমারী মানবিক ও আর্থিক দিক থেকে ভারতে অভিশাপ হয়ে এসেছে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ১৪০,০০০-র বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন। আমেরিকার পর এই মৃত্যুর সংখ্যা বিশ্বে সর্বোচ্চ, এর অর্থ, প্রতি ১০০,০০০ জনের মধ্যে ১০ জনের মত করোনায় মারা গিয়েছেন। যদিও ইউরোপ ও উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকার থেকে এই হার চোখে পড়ার মত কম।

তবে লকডাউনের কড়াকড়ি যত শিথিল হচ্ছে, অর্থনীতি সুদিনের মুখ দেখছে। এবার চাষ ভাল হওয়ায় উন্নতির স্টিয়ারিং ধরেছে কৃষি ক্ষেত্র। যদিও করোনার আগে বৃদ্ধির যে পরিস্থিতি ছিল, তা এখনও দেখা যায়নি।