ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: পাঁচটি সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে সঙ্কটজনক রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। এবিপি আনন্দের খবরের জেরে ২৬ ঘণ্টা বাদে শেষমেশ রোগীকে ভর্তি করল আরজিকর হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টার।


গতকাল ধানকল যন্ত্রে হাত ঢুকে যাওয়ায় বীরভূমের মুরারইয়ের বাসিন্দা ১৩ বছরের ওই কিশোরের। বাঁ হাতের কনুইয়ের নিচের অংশ ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরিবারের অভিযোগ, এরপর রোগীকে নিয়ে শুরু হয় টানাপোড়েন। পাঁচটি সরকারি হাসপাতাল সহ মোট ছটি জায়গা থেকে প্রত্যাখ্যাত হন তারা। প্রায় ২৬ ঘণ্টা কিশোরকে নিয়ে হাসপাতালের দোরে দোরে ঘোরেন বলেই অভিযোগ তাঁদের।

প্রথমে রামপুরহাট মেডিক্যাল, সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল। যেখানে প্রাথমিক ব্যান্ডেজের পর পাঠিয়ে দেওয়া হয় কলকাতার এসএসকেএমে। সেখানেও প্রাথমিক চিকিৎসার পর কিশোরের পরিবারকে জানানো হয় প্লাস্টিক সার্জরি বিভাগ থাকলেও কোনও বেড সেখানে নেই। হতবাক পরিবার সেখানে প্রায় ঘণ্টা পাঁচেক অপেক্ষা করেন।

ঠান্ডার মধ্যে কিশোরকে কাতরাতে দেখে কিশোরের পরিবার তাকে নিয়ে ছোটে এনআরএস-এ। যেখানে এর্মাজেন্সি বিভাগে কিশোরের পরিবারকে জানানো হয় তাদের প্লাস্টিক সার্জরি বিভাগ নেই, যার ফলে ফের তারা রোগীকে এসএসকেএম-এ নিয়ে ছোটেন।সেখান ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করলেও কোনও চিকিৎসা হয়নি। রাত গড়িয়ে সকাল হয়ে যাওয়ার পর কিশোরটিকে নিয়ে তার পরিবার ছোটে আরজি কর হাসপাতালে।

পরিবারের অভিযোগ, আরজি করের ট্রমা কেয়ার সেন্টার থেকে রোগীকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয় এসএসকেএম-এ। টানাপোড়েনের জেরে চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হওয়ায় কিশোরের হাতটি বাদ যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা অসহায় পরিবারের খবরটি এবিপি আনন্দে সম্প্রচারিত হতেই নড়েচড়ে বসে বিভিন্ন মহল। কিশোরকে ভর্তি করে আরজিকর।

এসএসকেএম, এনআরএস ও আরজিকরের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। বাকি দুটি হাসপাতালের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। পরিবার সূত্রে খবর, অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সঙ্গে তাদের আক্ষেপ এসএসকেএম হাসপাতাল দ্রুত ব্যবস্থা নিলে, হয়তো জুড়ে দেওয়া যেত কিশোরের বাদ পড়া হাত।

চিকিৎসকরা অবশ্য এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানাননি। প্লাস্টিক সার্জেনের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসার বিষয়টা তারা দেখছেন। আপাতত কিশোরের অবস্থা স্থিতিশীল বলেই জানা যাচ্ছে। এদিকে খবর পেয়ে পরিবার স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় চিকিৎসার সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে কিশোরটিকে সুস্থ করে তোলা যায়।