নয়াদিল্লি: দিল্লির এক আদালত আইএনএক্স মিডিয়া বেআইনি অর্থ লেনদেন মামলায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরমকে আগামীকাল তিহার জেলে জিজ্ঞাসাবাদ, এমনকী প্রয়োজনে গ্রেফতার করতেও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-কে সম্মতি দিল। এ ব্যাপারে রায়দান স্থগিত রেখেছিল আদালত। সিবিআইয়ের দায়ের করা আইএনএক্স মিডিয়া দুর্নীতি মামলায় ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত তিহার জেলে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে থাকতে হবে প্রথম সারির কংগ্রেস নেতা চিদম্বরমকে। গত ২১ আগস্ট তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তিহার জেলে ৪০ দিন কাটিয়ে ফেলেছেন তিনি। আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় ইডি চিদম্বরমকে গ্রেফতার ও জেরার অনুমতি চেয়েছিল আদালতের কাছে। বিশেষ বিচারক অজয় কুমার কুহার দুটিই মেনে নেন, তবে বিপরীত ফর্ম্যাটে। কুহার বলেছেন, এজেন্সি প্রথমে তাঁকে জেরা করবে, একবার জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করতে পারে।
আদালতের আদেশ বেরনোর পর ইডি-র পক্ষ থেকে রাউস এভিনিউয়ের কোর্ট চত্বরে কোনও এক জায়গায় চিদম্বরমকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চাওয়া হয়। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা চিদম্বরমকে কোর্ট কমপ্লেক্স সংলগ্ন একটি ঘরে ২০ মিনিট জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তাব দেন। বিচারপতি কুহার অবশ্য শোনামাত্রই তা খারিজ করে বলেন, এত তাড়া কীসের! তিনি বলেন, এজেন্সিকে অভিযুক্তের মানমর্যাদার কথা ভাবতে হবে, কোনওমতেই তার হানি করা চলবে না। আদালত ইডি-কে বলে, এই ভদ্রলোককে আপনারা জিজ্ঞাসাবাদ করে এখানে সর্বসমক্ষে গ্রেফতার করবেন, এটা তাঁর পক্ষে সম্মানজনক হবে না। এদিকে চিদম্বরম একই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে জামিন চেয়ে চিদম্বরম দাবি করেছেন যে, সিবিআই তাঁকে স্রেফ অপদস্থ করতেই জেলে রেখে দিতে চায়।


পরে ইডি আদালতকে জানায়, বুধবার তিহার জেলে গিয়ে তাদের অফিসাররা আদালতের নির্দেশমতো কারণ ব্যাখ্যা করে চিদম্বরমকে গ্রেফতার করবেন।
চিদম্বরমের হয়ে তাঁর দুই আইনজীবী কপিল সিবল ও অভিষেক মনু সিংভি শীর্ষ আদালতে মামলার সাক্ষীদের ওপর চিদম্বরমের প্রভাব খাটানোর চেষ্টার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে সওয়াল করেন, এই কংগ্রেস নেতা বা তাঁর পরিবারের কেউ কোনও সাক্ষীর সঙ্গে যোগাযোগের বা প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ ওঠেনি। দুর্নীতি মামলায় আর্থিক লোকসান বা টাকাপয়সা নয়ছয়ের অভিযোগও অস্বীকার করেন তাঁরা। তিনি চম্পট দিতে পারেন, এমন ঝুঁকি আছে, তথ্যপ্রমাণ নষ্ট ও সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন, এই তিনটি কারণ দেখিয়ে দিল্লি হাইকোর্ট গত ৩০ সেপ্টেম্বর চিদম্বরমের জামিনের আবেদন খারিজ করেছিল। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সিবল, সিংভি।
এদিকে বুধবার আদালত সিবিআইয়ের প্রতিনিধি সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার বক্তব্য শুনবে।
প্রসঙ্গত, সিবিআই যে আইএনএক্স মিডিয়া দুর্নীতি মামলার তদন্ত করছে, তার সঙ্গেই যোগ থাকা বেআইনি অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত মামলাটি তদন্ত করছে ইডি।
চিদম্বরম প্রথম কংগ্রেস-ইউপিএ সরকারের অর্থমন্ত্রী থাকাকালে পিটার ও ইন্দ্রানী মুখোপাধ্যায়ের তৈরি আইএনএক্স মিডিয়াকে বিদেশ থেকে ৩০৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ পাওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগ প্রমোশন বোর্ডের ছাড়পত্র মঞ্জুর করায় অনিয়ম হয়েছে বলে সিবিআইয়ের অভিযোগ।