নয়াদিল্লি: ইসলামিক স্টেট (আইএস বা আইসিস)-অনুপ্রাণিত গোষ্ঠীর ধৃত ১০ জন সদস্যকে বৃহস্পতিবার ১২ দিনের এনআইএ হেফাজতে পাঠাল দিল্লির একটি আদালত। অভিযোগ, দিল্লি ও উত্তর ভারতে আত্মঘাতী হামলা থেকে শুরু করে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ, রাজনীতিক-হত্যা এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানোর ছক কষছিল তারা।
এদিন আদালতে এনআইএ কৌঁসুলি সওয়াল করে দাবি করেন, ধৃতেরা যে হরকত-উল-হরব-এ-ইসলাম গোষ্ঠীর সদস্য, সেই গোষ্ঠীর সম্পর্কে বিভিন্ন দিক থেকে গোয়েন্দা তথ্য আসছে। ফলে, ওই নেটওয়ার্ক সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য জানতে ধৃতদের হেফাজতে নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। এনআইএ-র তরফে ১৫ দিনের হেফাজতের দাবি করা হয়। সরকারি কৌঁসুলির দাবির বিরোধিতা করেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী। কিন্তু, আদালত ধৃতদের ১২ দিনের এনআইএ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
প্রসঙ্গত বুধবার, দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশের ১৭টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে আইএস জঙ্গিদের এই নতুন মডিউলের হদিশ পায় এনআইএ। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল ও উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখার সঙ্গে করা ওই যৌথ অভিযানে উদ্ধার হয় রকেট লঞ্চার, ১১২টি অ্যালার্ম দেওয়া ঘড়ি, বুলেটপ্রুফ ভেস্ট তৈরির সরঞ্জাম, কুড়িটি পিস্তল। মেলে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম সালফেট, পটাশিয়াম নাইট্রেট এবং সালফার। এসব ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক তৈরি হচ্ছিল বলে অনুমান গোয়েন্দাদের। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সাড়ে সাত লক্ষ টাকা। এনআইএ আরও জানায়, বম্ব তেরির সার্কিটের জন্য ধৃতরা রিমোট-কন্ট্রোল দেওয়া খেলনা গাড়ি ও ওয়ারলেস ডোরবেলও প্রচুর পরিমাণে কেনে।
ধৃতদের ডেরা থেকে ৯১টি মোবাইল ফোন, ১৩৪টি সিম কার্ড, ৩টি ল্যাপটপ, ছুরি, তরোয়াল, আইএস-সম্পর্কিত পুঁথি, লেখাও উদ্ধার হয়। দলের পান্ডা মুফতি মহম্মদ সোহেল ওরফে হজরত সহ ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
ধৃতদের মধ্যে নয়ডার একটি নামী প্রতিষ্ঠানের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রও রয়েছে। গোয়েন্দাদের অনুমান, এই জঙ্গিরা আত্মঘাতী হামলার ছক কষেছিল। এনআইএ সূত্রে খবর, বিদেশে থাকা এক হ্যান্ডলারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ধৃতদের।