বেঙ্গালুরু: চন্দ্রপৃষ্ঠে সফট ল্যান্ডিং করতে পারেনি ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)-র চন্দ্রযান ২-র ল্যান্ডার বিক্রম। তারপর থেকেই বিক্রমের সঙ্গে যোগায়োগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।তিন সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। কিন্তু চাঁদের বুকে থাকা ল্যান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলার চেষ্টা এখনও ছেড়ে দেয়নি ইসরো। সংস্থার এক পদস্থ আধিকারিক মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন।
গত সাত সেপ্টেম্বর ইসরো জানিয়েছিল যে, গ্রাউন্ড স্টেশনে বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেছে। ল্যান্ডার বিক্রমের ভেতরেই ছিল রোভার প্রজ্ঞান। চাঁদের বুকে বিক্রমের আলতো ভাবে পাখির পালকের মতো নামার কথা ছিল। কিন্তু চাঁদের মাটি ছোঁয়ার কয়েক মিনিট আগে বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর থেকে বেঙ্গালুরুতে ইসরো-র পক্ষ থেকে যোগাযোগ পুণঃস্থাপনের জন্য সব ধরনের চেষ্টা চালানো হয়। ১০ দিন আগে চাঁদে রাত নামার পর ওই প্রচেষ্টায় ছেদ পড়েছিল।
ইসরো চেয়ারম্যান শিবন বলেছেন, বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ নতুন করে গড়ে তোলা এখন সম্ভব নয়। এখন চাঁদে রাত চলছে। হতে পারে,এর পর এই চেষ্টা সম্ভবত আবার শুরু করা হবে। যেখানে বিক্রম ল্যান্ড করেছিল, সেখানে এখন রাত। তাই বিদ্যুত্ তৈরি করা সম্ভব নয়। এরপর (চাঁদের দিন শুরু হলে) আমরা চেষ্টা করব।
চন্দ্রযান ২ ছিল খুবই জটিল একটি অভিযান। এই অভিযানের মাধ্যমে একসঙ্গে পাঠানো হয়েছিল অরবিটার, ল্যান্ডার ও রোভার। চাঁদের দক্ষিণ মেরু সম্পর্কে জানতে এই অভিযান। চাঁদের ওই অংশ এর আগে কোনও দেশই এই চেষ্টা করেনি।
উত্ক্ষেপণের আগে ইসরো জানিয়েছিল, ল্যান্ডার ও রোভারের অভিযান-পর্ব হবে এক চান্দ্রদিন, যা পৃথিবীর ১৪ দিনের সমান।
মহাকাশ বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ নতুন করে গড়ে তোলা খুবই কঠিন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরোর এক আধিকারিক বলেছেন, এতগুলি দিন কেটে যাওয়ার পর যোগাযোগ ফের গড়ে তোলা খুবই কঠিন। কিন্তু চেষ্টা করাই যেতে পারে।
চাঁদের বুকে তীব্র ঠাণ্ডায় ল্যান্ডার কেমন থাকতে পারে, এই প্রশ্নের জবাবে ওই আধিকারিক বলেছেন, শুধু ঠাণ্ডাই নয়, ইমপ্যাক্ট শকও একটা উদ্বেগের বিষয়। ল্যান্ডার খুব বেশি গতিতে নেমেছে। এরফলে ল্যান্ডারের ভেতরে থাকা বহু জিনিস ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
অন্যদিকে, শিবন জানিয়েছেন, অরবিটার ভালো ভাবে কাজ করছে।