কলকাতা: ভাদ্র মাসের কৃষ্ণাষ্টমীতে মথুরার কারাগারে জন্ম নিয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ৷ সেই উপলক্ষে গোটা দেশে আজ পালিত হচ্ছে জন্মাষ্টমী৷ করোনা আবহে উত্সবের রং কিছুটা ফিকে। তবে মথুরা, বৃন্দাবনে দিনটিকে সাড়ম্বরে পালন করা হচ্ছে। রয়েছে পুণ্যার্থীদের ভিড়। বিভিন্ন মন্দিরে চলছে আরতি। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে নয়ডার ইসকন মন্দিরে কৃষ্ণ নামে মেতেছেন ভক্তরা। দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাহুল গান্ধী।


উল্লেখ্য, এবার বেলুড় মঠের পুজো ১২১ বছরে পা দিল। স্বামী বিবেকানন্দের হাত ধরে ১৯০১ সালে মঠে শুরু হয়েছিল দুর্গা পুজো। মূল মন্দিরে চণ্ডীপাঠ, পূজার্চনার মাধ্যমে এদিন কাঠামো পুজো করা হয়। প্রথম দিকে কুমোরটুলি থেকে আনা হত প্রতিমা। পরে মঠে রেখে দেওয়া কাঠামোতেই প্রতিমা গড়া হয়। 


দেবকী ও বাসুদেবের সন্তান কৃষ্ণ। ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে মথুরায় জন্ম হয় তাঁর। সেই সময় মথুরার রাজা ছিলেন দেবকীর ভাই কংস। তাঁকে ভবিষ্যবাণী করা হয়েছিল, দেবকী ও বাসুদেবের অষ্টম পুত্র তাঁকে হত্যা করবে।


কথিত আছে, কংস তাঁর বোন ও ভগ্নি-পতীকে ভালবাসতেন। কিন্তু, তাঁদের অষ্টম পুত্র তাঁকে হত্যা করবে, এই ভবিষ্যবাণী শোনার পর তাঁদের সব সন্তানকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন কংস। প্রথম ছয় সন্তানকে হত্যা করতে সক্ষমও হন। সপ্তম সন্তানের হদিশ পাননি কংস। অষ্টম সন্তান, অর্থাৎ কৃষ্ণের জন্মের সময় গোটা রাজ্য ঘুমিয়ে পড়েছিল। বাসুদেব গোপনে সেই সন্তানকে বৃন্দাবনের নন্দ বাবা ও যশোধাকে হস্তান্তরিত করেন।


জন্মাষ্টমীর এই উৎসবকে দেশের নানা প্রান্তে শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমী, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী রোহিনী এবং শ্রীকৃষ্ণ জয়ন্তী নামেও উদযাপন করা হয়। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিকেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিবস উপলক্ষে জন্মাষ্টমী পালন করা হয়। জন্মাষ্টমীতে পুণ্যার্থীরা কেউ সারাদিন আবার কেউ কেউ সারারাতও উপবাস করেন। পুজো দেওয়ার পর উপবাস ভাঙেন তাঁরা।


এদিন গোপালের পুজো করার সঙ্গে সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের জীবনের নানা ঘটনার কথা শোনানো হয়। পাশাপাশি গীতাপাঠও করা হয়ে থাকে।  হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, এক বর্ষণমুখর রাতে কারাগারে জন্ম হয় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের। তাঁর জন্মের পরই জেলের গরাদ নিজে থেকেই খুলে যায় এবং মামা কংসের হাত থেকে ছোট্ট কৃষ্ণকে রক্ষা করতে বাবা বাসুদেব তাকে নন্দরাজার মন্দিরে রেখে আসেন।


জন্মাষ্টমীর শুভ তিথিতে ভক্তরা দিনটা বিভিন্নভাবে পালন করেন। বিশেষত বৃন্দাবন ও মথুরাতে এই দিনটি বিশেষভাবে পালিত হয়। মহারাষ্ট্রে জন্মাষ্টমীতে 'দহি হান্ডি' উদযাপিত হয় মহা ধুমধাম করে। যেখানে বহু মানুষ একত্রিত হয়ে শ্রীকৃষ্ণের মাখন চুরির আদলে দই বা মাখনের হাঁড়ি ভাঙেন।