পুণে: ধর্মের দোহাই দিয়ে কাউকে হত্যা করা শুধু হিন্দুত্বেরই নয়, ভগবান রামেরও অপমান। রবিবার পুণেতে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমনই খোঁচা কংগ্রেস সাংসদ শশী তরুরের।


অল ইন্ডিয়া প্রফেশনালস কংগ্রেস (এআইপিসি)-র অধিবেশনে বক্তব্য রাখার সময় তাবরেজ আনসারির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তরুর। যেভাবে গণপ্রহারের সময় তাবরেজকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করা হয়েছিল, তার সমালোচনা করেন। তরুর বলেন, ‘হিন্দু ধর্ম এবং রামেরও অপমান হচ্ছে যখন তাদের নামে কাউকে হত্যা করা হচ্ছে।’

তরুর আরও বলেন, ‘ভারতের কথা বলার সময় আমরা বলি স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা। ভারতীয় সংবিধান ধর্ম, বর্ণ, জাতপাত, ভাষা নির্বিশেষে সকলের জন্যই যে সমান, সে কথাও তুলে ধরি।’

দেশে একের পর এক গণপ্রহারে মৃত্যু নিয়ে তরুর বলেন, ‘গত ছয় বছরে আমরা কী দেখেছি? পুণেতে মহসিন শেখকে হত্যা করা দিয়ে সূত্রপাত। গোমাংস নিয়ে যাচ্ছে সন্দেহে মহম্মদ একলাখকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল। পরে জানা যায় সেটা গোমাংস ছিল না। আর যদি গোমাংস হয়েও থাকে, একজন মানুষকে হত্যা করার অধিকার কে দিয়েছে?’ তরুর যোগ করেন, ‘দুগ্ধজাত পণ্যের ব্যবসার জন্য পেহলু খানের লরিতে করে গরু নিয়ে যাওয়ার অনুমতি ছিল। তাকেও মারা হল। একটা নির্বাচনের ফলাফল এমন ক্ষমতা দিয়েছে যে যাকে খুশি পিটিয়ে মেরে ফেলা যাবে?’

তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদ আরও বলেন, ‘১৫ বছরের বালক জুনেইদ খানকে ট্রেনের মধ্যে কুপিয়ে খুন করা হল। এটাই কি আমাদের ভারত? হিন্দু ধর্ম কি এটা শিখিয়েছে? আমিও তো হিন্দু। কিন্তু এই ধরনের নই। আমি একটি বই লিখেছি যার নাম – হোয়াই আই অ্যাম আ হিন্দু। সেই বইয়ে আমি তুলে ধরেছি যারা হিন্দুত্বের দোহাই দিয়ে মানুষ মারছে তারা আসলে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে চাইছে। এর সঙ্গে হিন্দু ধর্মের কোনও যোগ নেই। বৃহত্তর ভারত মানে শুধু সংখ্যালঘুদের জন্য কাজ করা তা নয়। আমরা সংখ্যালঘুদের জন্য কাজ করি কারণ মহাত্মা গাঁধী আমাদের শিখিয়েছেন অনগ্রসর শ্রেণির পাশে দাঁড়ানোটা আমাদের কর্তব্য।’